দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৈপীঠ নাম শুনলেই এখন মনে পড়ে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের কথা। জঙ্গল থেকে নদী পেরিয়ে এই এলাকায় ঘন ঘন চলে আসছে বাঘ। মাত্র ১৪ দিনের মধ্যে সেখানে সাতবার হানা দিয়েছে ডোরাকাটা। এভাবে বারংবার বাঘ এলাকায় হানা দেওয়ায় স্বাভাবিকভাবে আতঙ্কে থাকছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন। রীতিমতো বাইরে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন তারা। এই অবস্থায় পদক্ষেপ করতে চলেছে বনবিভাগ। বাঘের গতিবিধির উপর নজরদারির জন্য সেখানে বসানো হবে ট্র্যাপ ক্যামেরা।
আরও পড়ুন: গৃহস্থের দুয়ারে দক্ষিণরায়ের গর্জন, উঠোনে আঁচড়, মৈপীঠে আবার বাঘ–বন্দি খেলা শুরু
বনবিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, মোহনপুর থেকে কুলতলির দেউলবাড়ির দেবীপুর পর্যন্ত এলাকায় জঙ্গলে ১০০টি ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, মৈপীঠ, বৈকুন্ঠপুর পঞ্চায়েত এবং গুড়গুড়িয়া ভুবনেশ্বরী পঞ্চায়েত এলাকায় লোকালয়ের মধ্যে বাঘ চলে আসছে। সেক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, আজমলমারি ১ এবং ১১ নম্বর জঙ্গল থেকে বাঘ বেরিয়ে চলে এসেছিল লোকালয়ে। মৈপীঠের গঙ্গার ঘাট এলাকায় বাঘ খাঁচাবন্দি হওয়ার পর সেখানে আবার নতুন করে রয়্যাল বেঙ্গলের পায়ের ছাপ দেখা গিয়েছে। ফলে সেখানে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এই অবস্থায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার বনবিভাগ বাঘের গতিবিধি জানতে এবং কতগুলি বাঘ লোকালয়ে ঢুকছে তা জানতে এই ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা করেছে।
এবিষয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বন বিভাগীয় আধিকারিক নিশা গোস্বামী জানিয়েছেন, আজমলমারি জঙ্গলে ১ থেকে ৩, ১১ ও ১২ নম্বর এবং হেরোভাঙার ৯ নম্বর জঙ্গলে ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানো হবে। এছাড়াও, বাঘ যাতে জঙ্গলে ফিরে যায় তারজন্য সেন্সর সিগন্যাল আলো বসানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। এক্ষেত্রে জাল থেকে ৫ ফুট উপরে লাল, নীল এবং সবুজ রঙের আলো লাগানো থাকবে । বন আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এই আলো বাঘের চোখে পড়লেই বাঘ জঙ্গলে ফিরে যাবে। বন আধিকারিকরা জানান, সন্ধ্যের পর থেকে সকাল পর্যন্ত এই আলো জ্বালানো হবে।
সম্প্রতি মৈপীঠে ঘনঘন বাঘের আগমনের বিষয়ে বন দফতরের পক্ষ থেকে একটি বৈঠক করা হয়। সেখানে এবিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে তিন জায়গায় জাল ছেঁড়ার পাশাপাশি রাস্তায় বিদ্যুতের আলো না থাকা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। আলোচনায় ঠিক হয়েছে যে জঙ্গল বরাবর মৃত পশুর দেহ ফেলা যাবে না। এনিয়ে প্রচার চালানো হবে। এছাড়া বন বিভাগের তরফে প্রতি মাসে জাল পরীক্ষা করা হবে।