জলসীমা লঙ্ঘন করায় বাংলাদেশের জেলে বন্দি রয়েছে এপার বাংলার ৯৫ জন মৎস্যজীবী। তাদের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপরেই পশ্চিমবঙ্গের জেলে বন্দি থাকা ১২ জন বাংলাদেশি মৎসজীবী মুক্তি পেলেন। গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে জলসীমা লঙ্ঘনের অপরাধে এই ১২ জন মৎস্যজীবী পশ্চিমবঙ্গের সংশোধনাগারে বন্দি ছিলেন। মঙ্গলবার কাকদ্বীপের বিডিও এবং কাকদ্বীপ থানার আইসির উপস্থিতিতে ডায়মন্ড হারবার মহকুমা সংশোধনাগার থেকে ওই ১২ জন মৎস্যজীবীকে বাংলাদেশ সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই অবস্থায় বাংলাদেশ থেকে কবে ৯৫ জন মৎসজীবীকে মুক্তি দেওয়া হবে সেই আশায় দিন কাটছে পরিবারের।
আরও পড়ুন: ‘বাংলাদেশিদের ছেড়ে দাও’, আটকে থাকা ভারতের ৯৫ জন মৎস্যজীবী ফিরছেন, জানালেন মমতা
জানা যাচ্ছে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর নৌকা ডুবে যাওয়ার পর ওই ১২ জন মৎসজীবী ভারতীয় জলসীমায় প্রবেশ করেন। তারা দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমায় চলে আসেন। এরপর ফরেনার্স অ্যাক্ট ১৯৪৬-এর ১৪ ধারায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের মুক্তির বিষয়ে কাকদ্বীপের তৃণমূল বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা বলেন, ‘ডায়মন্ড হারবারের সংশোধনাগার থেকে ১২ জন বাংলাদেশি মৎসজীবীকে কাকদ্বীপ আদালতের নির্দেশে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তাদের অক্ষয়নগরের বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার পর বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
সাকিল আহমেদ নামে মুক্তি পাওয়া বাংলাদেশি এক মৎস্যজীবী বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে এখানে খুব ভালো ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা সবাই নিরাপদ ছিলাম। আমরা খুব খুশি যে আমরা দেশে ফিরতে পেরেছি। আমরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ। আমরা আশা করছি বাংলাদেশের জেলে বন্দি থাকা ভারতীয় মৎস্যজীবীদের দ্রুত ছেড়ে দেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, গত তিন মাসের মধ্যে জলসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগে মোট ৯৫ জন মৎসজীবী বাংলাদেশের জেলে বন্দি রয়েছে। এরমধ্যে সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে বাংলাদেশের উপকূলরক্ষী বাহিনী ৭৯ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে প্রথমে গ্রেফতার করেছিল। তারাও সকলে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। অভিযোগ, আন্তর্জাতিক জলসীমা পেরিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করার অভিযোগে গত অক্টোবর মাসে প্রথমে ৩১ জন মৎসজীবী। তারও কিছুদিন পরে ৪৮ জন মৎসজীবীকে গ্রেফতার করেছিল বাংলাদেশ উপকূলরক্ষী বাহিনী । পরে নভেম্বরে গ্রেফতার করা হয় ১৬ জনকে। মুখ্যমন্ত্রী তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য ইতিমধ্যেই কেন্দ্রকে চিঠি পাঠিয়েছেন। সেই আবহে বাংলাদেশের মৎস্যজীবীদের মুক্তি দেওয়া হল।