করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে রাজ্যে। স্বভাবতই এর প্রভাব এসে পড়েছে লোকাল ট্রেনের চলাচলেও। ইতিমধ্যে রেলের চালক ও গার্ড করোনা আক্রান্ত হওয়ায় অনেক লোকাল ট্রেন বাতিল করতে হয়েছে। এবার করোনা সংক্রমণের মাত্রা ক্রমশ বাড়তে থাকায় রেলে যাত্রী চলাচলও কমতে শুরু করেছে।
হাওড়া স্টেশনের সিনিয়র মুখ্য প্রবন্ধক জানান, করোনা পরিস্থিতিতে যাত্রী সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে। আগে হাওড়া স্টেশনে দিনে প্রায় ১০ লাখ লোক যাতায়াত করতেন। ট্রেন নতুন করে চালু হওয়ার পর দিনে স্টেশনে যাত্রীদের আনাগোনা সাড়ে ন'লাখে পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু নতুন করে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ায় টিকিট বিক্রি প্রায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কমে গেছে।শুধু লোকান ট্রেন নয়, মেল-এক্সপ্রেসের ক্ষেত্রেও কমেছে।এদিন তিনি জানান, রেল স্টেশনে কাউকেই মাস্ক ছাড়া প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। প্রবেশ পথে থার্মাল গান চালু হয়েছে। স্যানিটাইজারের ব্যবহার করা হচ্ছে।দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রথম দিকটায় মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত হয়নি।কিন্তু সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় মানুষ এখন ঘর থেকে অনেকটাই কম বেরোচ্ছেন। মানুষের মধ্যে ভয়ও কাজ করতে শুরু করেছে। রেলের তরফে জানানো হচ্ছে প্রতিটি স্টেশনে বিশেষ মাইকিং করা হচ্ছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ রাজ্য তথা দেশে থাবা বসানোর পরই সাধারণ নিত্য যাত্রীদের সচেতন করার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিনা মাস্কে কাউকে স্টেশন চত্বরে ও ট্রেনে সফর করতে দেখা গেলে তাকে ৫০০ টাকা জরিমানার কথাও ঘোষণা করেছে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ।
ইতিমধ্যে পূর্ব রেলের হাওড়া স্টেশনে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪ জনের বেশি গার্ড। ফলে গার্ডের অভাবে বাতিল করা হচ্ছে হাওড়া স্টেশনের মেন লাইন এবং কর্ড লাইনের একাধিক লোকাল ট্রেন। পূর্ব রেল সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে হাওড়া ও শিয়ালদহ শাখা মিলিয়ে প্রায় ২০০ জন রেলকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। এর জেরে হাওড়া ও শিয়ালদহ শাখায় বাতিল করা হয়েছে অসংখ্য ট্রেন। হাওড়া শাখায় ১৬টি প্যাসেঞ্জার ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে আজিমগঞ্জ-রামপুরহাট প্যাসেঞ্জার, রামপুরহাট-বর্ধমান প্যাসেঞ্জার, রামপুরহাট-আজিমগঞ্জ প্যাসেঞ্জার, আজিমগঞ্জ-নলহাটি প্যাসেঞ্জার, নলহাটি-আজিমগঞ্জ প্যাসেঞ্জার, আজিমগঞ্জ-কাটোয়া প্যাসেঞ্জার, কাটোয়া-আজিমগঞ্জ প্যাসেঞ্জার, বর্ধমান-রামপুরহাট প্যাসেঞ্জার, বর্ধমান-কাটোয়া প্যাসেঞ্জার, কাটোয়া-বর্ধমান প্যাসেঞ্জার, ব্যান্ডেল-বর্ধমান প্যাসেঞ্জার, বর্ধমান-ব্যান্ডেল প্যাসেঞ্জার। এছাড়াও বাতিল করা হয়েছে ১৯ জোড়া লোকাল ট্রেন।