বাংলার নির্বাচনী পরিবেশে এখন বারুদের গন্ধ। কারণ রাজ্যজুড়ে চারিদিকে বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। তবে এই খবরের মধ্যে তোলপাড় করে দেওয়ার মতো বিষয় হল, নাবালকের জড়িয়ে পড়া। অর্থাৎ নাবালকের হাতে বোমা। যা জানতে পেরে পুলিশ কর্তাদের চোখ কপালে উঠেছে। মাত্র ১৬ বছর বয়সে এলাকার দাগী দুষ্কৃতী হয়ে উঠেছিল সে৷ যা কল্পনা করতে পারছেন না পুলিশ অফিসাররা। বৃহস্পতিবার রাতে নিজের বাড়ির সামনে সেই নাবালক কিশোরেরই গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার হল ভাটপাড়ায়৷ নিহত কিশোরের নাম রাজা চৌধুরী৷ পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, মোটরবাইকে করে এসে রাজাকে গুলি করে খুন করেছে দুই দুষ্কৃতী৷ কিন্তু কেন? তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মাত্র ৫০০ টাকা পেলে বোমা মারতে চলে যেতে রাজা নামে ওই কিশোর৷ তার নামে চারটি এফআইআর রয়েছে৷ বোমা মারা–সহ সমাজবিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগে আগে তাকে গ্রেফতার করে জুভেনাইল হোমেও পাঠিয়েছে পুলিশ৷ ভাটপাড়া থানায় ডেকে একাধিকবার বোঝানোও হয়েছে৷ দেওয়া হয় জামাকাপড় এবং পড়াশোনার বইও৷ কিন্তু মূলস্রোতে ফেরেনি রাজা।
যদিও রাজার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, রাতে নিজের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে এক বন্ধুর সঙ্গে গল্প করার সময় মোটরবাইকে চেপে আসে দুই দুষ্কৃতী৷ একজন রাজার হাত মাথার পেছন দিকে চেপে ধরে৷ অন্যজন পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে রাজার মাথায় গুলি করে৷ পুলিশের দাবি, থানার খুব কাছে হওয়ায় গুলির শব্দে ছুটে আসেন পুলিশকর্মীরা৷ কিন্তু সেখানে কারও দেখা মেলেনি৷ বরং দেহের পাশে পড়েছিল আগ্নেয়াস্ত্র৷ এখন প্রশ্ন, দুষ্কৃতীরা কেন এভাবে খুনের প্রমাণ ফেলে যাবে? পুলিশের অনুমান, নিজেই গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছে রাজা৷ ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷
ভাটপাড়া থানার পুলিশ রাজার পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী, ৩০২ ধারায় খুন, ৩৪ ধারায় সংগঠিত অপরাধ এবং অস্ত্র আইনের ২৫ এবং ২৭ নম্বর ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে৷ নিহত কিশোরের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে খুন নাকি আত্মহত্যা তা স্পষ্ট হবে৷ এমনকী এই ঘটনার পেছনে রাজনীতির যোগ আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।