তিন বছর ধরে গা–ঢাকা দিয়ে থাকার পর পুজোর মুখে কলকাতায় প্রকাশ্যে এসেছিলেন তিনি। এসেই মমতা বন্দ্যোপাধয়ের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন। এমনকী ২০২১ সালে তৃণমূলকে সমর্থন করে নির্বাচনে তাঁরা লড়াই করবেন বলেও ঘোষণা করেন। হ্যাঁ, তিনি বিমল গুরুং। কিন্তু এই ঘোষণার পরও পাহাড়ে তেমন খাপ খুলতে পারছিলেন না তিনি। তবে এবার দল ভাঙানোর খেলায় নেমে বার্তা দিলেন, এখনও পাহাড়ে তাঁর অস্তিত্ব বিরাজমান।
ঠিক কী ঘটেছে? সংবাদসংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, দার্জিলিং পুরসভার ১৭ জন কাউন্সিলর বিজেপি ছেড়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চায় যোগ দিলেন। যাঁরা ২০১৯ সালে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু বিমল গুরুং ফিরে আসতেই তাঁরাও ফিরে এলেন। আর এই ঘটনার মাধ্যমে দুটো বার্তা দেওয়া হল। এক, পাহাড়ে তাঁর প্রাসঙ্গিকতা যথেষ্ট আছে। দুই, তিনি আর বিজেপির সঙ্গে নেই। আবার তিনি পাহাড়ে ফিরতে চান এবং সক্রিয় রাজনীতি করতে চান।
এই ১৭ জন কাউন্সিলরের দাবি, ‘১৭ বছর ধরে এনডিএতে ছিলাম। কিন্তু বিজেপি একটি প্রতিশ্রুতিও পূরণ করেনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই সমস্ত প্রতিশ্রুতি পূরণ করেন। তাই ২০২১ সালে তাঁকেই আমরা সমর্থন করব।’ কলকাতায় আত্মপ্রকাশের পর একই কথা শোনা গিয়েছিল বিমল গুরুংয়ের গলায়।ইতিমধ্যেই পাহাড়ে বিমল-বিরোধী সভা, সমাবেশ, মিছিল হতে শুরু করেছে। নবান্নে গিয়ে বৈঠক করে এসেছেন বিনয় তামাং, অনীত থাপারা। বৈঠক শেষে তাঁদের দাবি ছিল, বিমল পাহাড়ে ক্লোজড চ্যাপ্টার। তাঁকে নিয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি।
ঠিক তারপর এই ঘটনা ঘটিয়ে বিমলও বুঝিয়ে দিলেন এবার তাঁকে নিয়ে আলোচনা হবে। আর তিনি পাহাড়ে ক্লোজড চ্যাপ্টার নন। দার্জিলিং পুরসভায় মোট ৩২ জন কাউন্সিলর। সেখানে ১৭ জন ফিরে এলেন। এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে এই ১৭ জন কাউন্সিলর জানিয়ে দিলেন, তাঁরা তৃণমূলকে সমর্থন করবেন। ইতিমধ্যেই আদিবাসী বিকাশ পরিষদও জানিয়ে দিয়েছে, তারা তৃণমূলকে সমর্থন করবে। বাঁকুড়ায় দাঁড়িয়ে আজ যখন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, বিজেপি ২০০ বেশি আসন নিয়ে বাংলায় সরকার গড়বে। তখন এই ঘটনা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।