সুরক্ষাবিধি না মেনে সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে নেমে মৃত্যু হল ১ ব্যক্তির। তাঁকে উদ্ধার করতে গিয়ে মৃত্যু হল আরও ১ জনের। বিষাক্ত গ্যাসে গুরুতর অসুস্থ ২ জন। শনিবার সকালে এই ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের রবিদাসপুরের। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে এলাকায়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তিন মাস আগে বাড়ি গেঁথেছিলেন সহদেব দাস নামে এক ব্যক্তি। শনিবার তার সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করলে কার্তিক সিংহ (৩৮) নামে এক শ্রমিককে নামান তিনি। সেপটিক ট্যাঙ্কে নামার বেশ কিছুক্ষণ পরও উঠে আসেননি ওই ব্যক্তি। তাঁর খোঁজ করতে নামেন মধুসুদন দাস নামে আরেকজন। তিনিও বিষাক্ত গ্যাসের জেরে জ্ঞান হারান। এর পর সেপটিক ট্যাঙ্কে নামেন মধুসুদনবাবুর ছেলে বিশ্বম্ভর। তিনিও অজ্ঞান হয়ে পড়েন। শেষে নামেন আরও একজন। তিনিও উঠতে পারেননি। শেষে চার জনকেই সেপটিক ট্যাঙ্কের দেওয়াল ভেঙে উদ্ধার করা হয়। নিয়ে যাওয়া হয় ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে কার্তিক সিংহ ও মধুসুদন দাসকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেপটিক ট্যাঙ্কে নেমে মৃত্যুর ঘটনা নতুন না হলেও এই প্রবণতা রোখা যাচ্ছে না। এই ধরণের ঘটনায় যাঁদের মৃত্যু হয় তাঁরা প্রায় প্রত্যেকেই অত্যন্ত নিম্নবিত্ত পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। ফলে পরিবারগুলি অথই জলে পড়ে।
শিল্প সুরক্ষার সঙ্গে যুক্ত এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সুরক্ষাবিধি না মেনে সেপটিক ট্যাঙ্কে নামা মৃত্যুকে ডেকে আনার নামান্তর। বিশেষ গ্যাস মাস্ক ও দড়ি ছাড়া কখনোই সেপটিক ট্যাঙ্কে নামা উচিত নয়। কার্বন ডাই অক্সাইড ও মিথেনের মতো ভারী গ্যাস সেপটিক ট্যাঙ্কের মধ্যে জমা হয়। তাছাড়া সেপটিক ট্যাঙ্কের ভিতরে থাকা বর্জ্য পদার্থ থেকেও মিথেন তৈরি হয়। এই গ্যাস শ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করলে প্রথমে সংজ্ঞা হারায় মানুষ। তার পর কয়েক মিনিটের মধ্যে মৃত্যু হয় তার। কিন্তু গ্রামাঞ্চল তো বটেই, কলকাতা শহরেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেপটিক ট্যাঙ্কে নামার সুরক্ষাবিধি মানা হয় না। ফলে বেঘোরে মরতে হয় গরিব শ্রমিকদের।