জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জন্য রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এমনই দাবি করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে তিনি ঘোষণা করেছেন যে মৃতদের পরিবারপিছু দু'লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে রাজ্য সরকার। যদিও চাকরি প্রদানের বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে দেগঙ্গায় যে শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে, তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বৃহস্পতিবারই সরকারি চাকরি প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী, দেগঙ্গার বিধায়ক রহিমা মণ্ডলরা। তবে সেই বিষয়ে আজ কিছু জানাননি মুখ্যমন্ত্রী।
‘দুঃখজনক এবং দুর্ভাগ্যজনক’
শুক্রবার তিনি শুধু বলেছেন, ‘জুনিয়র ডাক্তাররা দীর্ঘদিন কর্মবিরতি পালন করায় স্বাস্থ্য পরিষেবা যে বিঘ্নিত হয়েছে, তার ফলে আমরা ২৯টি মূল্যবান জীবন হারিয়ে ফেলেছি। তা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং দুর্ভাগ্যজনক। শোকাহত পরিবারকে সহায়তা করার জন্য প্রত্যেক মৃতের পরিবারের সদস্যদের দু'লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করার কথা ঘোষণা করছে রাজ্য সরকার।’
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর থেকে একগুচ্ছ দাবি জানিয়ে জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবিরতি পালন করছেন। গত ৯ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছিল যে জুনিয়র ডাক্তাররা কাজে না ফেরায় ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৯-তে ঠেকেছে বলে আজ দাবি করলেন মমতা।
‘বিনা চিকিৎসায়’ মৃতদের জন্য কে ‘জাস্টিস’ চাইবে? প্রশ্ন তৃণমূলের
তৃণমূল কংগ্রেসের তরফেও বারবার অভিযোগ করা হচ্ছে যে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কার্যত বিনা চিকিৎসায় অনেকের মৃত্যু হচ্ছে। তাঁদের জন্য কে ‘জাস্টিস’ চাইবেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে রাজ্যের শাসক দল। আজ দুপুরেই তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয় যে কোচবিহারের পাঁচ বছরের মেয়ের হৃদপিণ্ডের জটিল অপারেশন হওয়ার কথা আছে। এনআরএস হাসপাতাল আছে। কিন্তু চিকিৎসকরা অস্ত্রোপচার নিয়ে কোনও তথ্য না দেওয়ায় ঝুঁকির মুখে পড়ে গিয়েছে তার জীবন।
পালটা জুনিয়র ডাক্তারদের
যদিও পালটা আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, সিনিয়র ডাক্তাররা পরিষেবা দিচ্ছেন। খোলা আছে জরুরি বিভাগও। সেইসঙ্গে তাঁরা পালটা প্রশ্ন ছুড়েছেন যে কয়েক হাজার জুনিয়র ডাক্তার আন্দোলন করছেন বলে যদি রাজ্য়ের স্বাস্থ্য পরিষেবা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে বলা হয়, তাহলে পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য কাঠামোর হাল কতটা খারাপ, তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে।