১৬ বছরের এক নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ থানার পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে উঠল তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ। যদিও এ ঘটনায় ইতিমধ্যে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতরা তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ স্বীকারও করেছে। কিন্তু পুলিশের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের অভিযোগ, অভিযুক্তদের মধ্যে একজনকে আগে ধরলেও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয় পুলিশ। তাঁদের আরও অভিযোগ, মেয়েটি নিখোঁজ হওয়ার পর অন্তত ৫ দিন বেঁচে ছিল।
জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা নবম শ্রেণির ওই ছাত্রী ১০ অগস্ট নিখোঁজ হয়। পরের দিনই তার বাবা থানায় মিসিং ডায়েরি দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার এক অভিযুক্তের বাড়ির পেছনে সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে ওই নাবালিকার পচাগলা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
জলপাইগুড়ি জেলার পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব জানিয়েছেন, অভিযুক্ত রহমান আলি ও জামিরুল হক ওই নাবালিকাকে একটি ঘরে নিয়ে যায়। সেখানেই ওরা দু’জন ও আরেক অভিযুক্ত তামিরুল হক তাকে যৌন হেনস্থা করে। অভিযুক্তরা পার্শ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্দা এবং প্রত্যেকের বয়স ৩০–৩৫ বছরের মধ্যে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ১৫ অগস্ট ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয়। তার পর তাকে খুন করে দেহ সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দেয় অভিযুক্তরা। জানা গিয়েছে, ওই নাবালিকার সঙ্গে বন্ধুত্ব করে এই নৃশংস পরিকল্পনা করে ধৃত রহমান আলি। এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের ৮ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ৩ জনকে জেরা করে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
ঘটনার জেরে ইতিমধ্যে উত্তপ্ত জলপাইগুড়ি জেলার ওই এলাকা। রাজগঞ্জ থানার সামনে বিক্ষোভও দেখান গ্রামবাসীরা। তাঁরা পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ এনেছেন।
স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায় বলেন, ‘এটি একটি জঘন্য অপরাধ। যতটা প্রয়োজন ততটা গুরুত্ব না দিয়ে তদন্তে করেছেন পুলিশ আধিকারিকরা। পুলিশ বলছে, ১৫ অগস্ট মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয় এবং তার পরে খুন করা হয়। এর থেকে এটা পরিষ্কার যে, ১৫ অগস্ট পর্যন্ত মেয়েটি বেঁচে ছিল। পুলিশ দ্রুত তদন্ত করলে হয়তো মেয়েটি বেঁচে যেত।’
পুলিশ সুপার এ ব্যাপারে বলেন, ‘আমরা বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছি। কোনও পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে ওঠা তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ যদি সত্যি প্রমাণিত হয় তবে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’