সম্পত্তির লোভে খুনোখুনি বা প্রতারণার ঘটনা নতুন কিছু নয়। এবার চিকিৎসার নাম করে বৃদ্ধা মায়ের আঙুলের ছাপ নিয়ে পৈত্রিক সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল তিন সন্তানের বিরুদ্ধে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। বেআইনিভাবে সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন বৃদ্ধা এবং তার ছোট ছেলে ও সাত কন্যা। ঘটনাটি ঘটেছে ডালখোলায়। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
আরও পড়ুন: সম্পত্তি বিবাদের জেরে ভাইকে ইঁট দিয়ে মেরে খুন করল দাদা, থানায় করল আত্মসমর্পণ
জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ডালখোলা থানার পাতনুর সংলগ্ন দক্ষিণপাড়ার। বৃদ্ধার নাম লাইমন বিবি। আগেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর স্বামীর। তবে মৃত্যুর আগে ৬ একর ৩৫ শতক জমি তাঁর নামে করে গিয়েছিলেন স্বামী। লাইমন বিবি গত কয়েক বছর ধরেই প্যারালাইসিসে ভুগছেন। অভিযোগ, কয়েকদিন আগেই তাঁর তিন ছেলে তাঁকে ডাক্তার দেখানোর নাম করে রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে যায়। এরপরে কৌশলে দলিলে তারা মায়ের আঙুলের ছাপ নিয়ে সমস্ত সম্পত্তি নিজেদের নামে করে নেয়। এই তিন অভিযুক্তের নাম হল- মজিবুর রহমান, মোক্তার আলম এবং মোস্তাক আলম। তারা ৪ ভাই এবং ৭ বোন। তবে ছোট ভাই মঞ্জুর আলম এবং ৭ বোনকে পৈতৃক সম্পত্তি থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত করে এই সমস্ত সম্পত্তি তারা নিজেদের নামে করে নেন। সে বিষয়টি জানাজানি হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। ডালখোলা থানায় অভিযোগ জানান বৃদ্ধার ছোট ছেলে এবং তার ৭ কন্যা। সেই সঙ্গে বৃদ্ধা কর্ণজোড়ায় জেলা রেজিস্ট্রারের কাছে ৩ সন্তানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।
বৃদ্ধার অভিযোগ, চিকিৎসার নাম করে ১০টি আঙুলের ছাপ নিয়ে তিন ছেলে সমস্ত সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়েছে। তিনি এসব বিষয় বোঝেন না। দুদিন পর তার ছোট ছেলে এবং মেয়েরা সে বিষয়টি জানতে পারলেই শোরগোল পড়ে যায়। এরপর শুক্রবার ছোট ছেলে এবং ৭ মেয়ের সঙ্গে রেজিস্ট্রি অফিসে যান লাইমন বিবি। মঞ্জুর আলম জানান, তাঁর মাকে ডাক্তার দেখানোর নাম করে তিন দাদা জমি নিজদের নামে করে নিয়েছেন। তাঁকে এবং বাকিদের সম্পত্তি থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত করা হয়েছে। তারা রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে জমি ফেরানোর জন্য দাবি জানিয়েছেন।
তাঁর আরও অভিযোগ, তাঁর দাদারা তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দিয়েছেন। ফলে বাধ্য হয়ে তাঁকে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। এবিষয়ে জেলা রেজিস্ট্রার বিভুতিভুষণ মণ্ডল জানান, অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বৃদ্ধা জানান, তিনি সকলকেই সমান ভাগ দিতে চেয়েছিলেন। তবে ছেলেরা যে এরকম করতে পারবে তা তিনি ভাবতে পারছেন না। করণদিঘি ব্লকের বিএল অ্যান্ড এলআরও জানান, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।