কোনও প্রকল্পের জন্য ১৫৮ হেক্টর জমি প্রয়োজন। একফোঁটাও জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি। আবার কোনও প্রকল্পের জন্য ১০৬.৮৬ হেক্টর জমি লাগবে। সেখানে মাত্র ০.১৭ হেক্টর জমি পাওয়া গিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন রেল প্রকল্পের এমনই হাল বলে দাবি করল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয়েছে, নয়া প্রকল্পের জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের মাধ্যমে জমি অধিগ্রহণ করে থাকে রেল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সহযোগিতা মিলছে না। কাজের জন্য প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ করতে না পারায় বরাদ্দ আসা সত্ত্বেও কাজ থমকে আছে।
রেলের দাবি, জমি অধিগ্রহণের সমস্যার জন্যই বালুরঘাট থেকে হিলি নয়া লাইন, নৈহাটি থেকে রানাঘাট তৃতীয় লাইন-সহ একাধিক বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজের জন্য মোট ৩,০৪০ হেক্টর জমি লাগবে। সেখানে মাত্র ৬৪০ হেক্টর জমি পাওয়া গিয়েছে। যা শতাংশের বিচারে মাত্র ২১। এখনও ২,৪০০ হেক্টর জমি লাগবে বলে রেলের তরফে দাবি করা হয়েছে। যদিও সেই অভিযোগ নিয়ে রাজ্যের তরফে আপাতত কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
কত টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে?
রেলের দাবি, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন রেলের প্রকল্পের জন্য বছরে ৪,৩৮০ কোটি টাকা করে বরাদ্দ করা হয়েছিল। সেখানে ২০২৪-২৫ সালে বরাদ্দের অঙ্কটা হল ১৩,৯৪১ কোটি টাকা।
কোন কোন বড় প্রকল্পের কাজ থমকে আছে?
১) নবদ্বীপ ঘাট থেকে নবদ্বীপ ধাম নয়া লাইন (১০ কিলোমিটার): কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, সেই প্রকল্পের জন্য মোট ১০৬.৮৬ হেক্টর জমির প্রয়োজন। এখনও পর্যন্ত মাত্র ০.১৭ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। অর্থাৎ এখনও ১০৬.৬৯ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে।
২) চন্দনেশ্বর থেকে জলেশ্বর নয়া লাইন (৪১ কিলোমিটার): কেন্দ্রের দাবি, ওই নয়া লাইনের কাজের জন্য ১৫৮ হেক্টর জমি লাগবে। এক ছটাকও জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি।
৩) নৈহাটি থেকে রানাঘাট তৃতীয় লাইন (৩৬ কিলোমিটার): কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, জমি অধিগ্রহণের জেরে নৈহাটি-রানাঘাট তৃতীয় লাইনের কাজ আটকে আছে। মোট ৮৭.৮৩ হেক্টর জমি লাগবে। অধিগ্রহণ করা হয়েছে মাত্র ০.০৯ হেক্টর। এখনও ৮৭.৭৪ হেক্টর জমি অধিগ্রহণের কাজ বাকি আছে।
৪) বালুরঘাট থেকে হিলি নয়া লাইন (৩০ কিলোমিটার): জমিজটের কারণে সেই প্রকল্পের কাজও আটকে আছে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছে। কেন্দ্রের দাবি, ওই প্রকল্পের জন্য ১৫৬.৩৮ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। সেখানে ৬৭.৩৮ একর জমি মিলেছে। আরও ৮৮ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে।
৫) সাইথিঁয়া (৫ কিলোমিটার) এবং সীতারামপুরে (৭ কিলোমিটার) বাইপাস: ওই কাজের জন্য মোট ২২.২৮ একর জমি লাগবে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছে। কেন্দ্রের দাবি, এখনও পর্যন্ত মাত্র ২.২২ একর জমি পাওয়া গিয়েছে। লাগবে আরও ২০.০৬ একর জমি।