'করোনা ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মানুষ মারা যাচ্ছেন, তাই কেউ এটা ব্যবহার করবেন না!' করোনা ভ্যাকসিন ব্যবহার করা নিয়ে এই ধরনের অযৌক্তিক প্রচার করার অভিযোগে বৃহস্পতিবার কলকাতা ও নদিয়া থেকে আসা মোট চারজনকে গ্রেফতার করল পুরুলিয়ার সাঁতুড়ি থানার পুলিশ।
খবর পেয়ে এদিনই ঘটনাস্থলে গিয়ে ১ মহিলা সহ ৪ আগন্তুককে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। তারপর স্থানীয় বাসিন্দা আশা মণ্ডল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাঁতুরি থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই ৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে প্রচারপত্র একটি অ্যাম্বুল্যান্স বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
অন্য জেলা থেকে পুরুলিয়ার সাঁতুড়ি থানা এলাকায় এসে কেন এই অভিযুক্তরা করোনা ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে প্রচার করছিল? তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
এ প্রসঙ্গে রঘুনাথপুরের এসডিপিও দুর্বার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কী উদ্দেশ্য নিয়ে ধৃতরা প্রচার করতে এসেছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
শুক্রবার ধৃতদের রঘুনাথপুর আদালতে তোলা হলে চারজনকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম জগদীশ চন্দ্র, অভিমন্যু দত্ত, শঙ্কর সিং ও তানিয়া দত্ত। ধৃতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা অবৈজ্ঞানিকভাবে করোনা ভ্যাকসিনের ব্যবহার না করার স্বপক্ষে মৌখিকভাবে প্রচারের পাশাপাশি প্রচারপত্রও বিলি করছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিনে অভিযুক্তরা ওই এলাকায় এসে করোনার ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছিল।
অভিযুক্তদের দাবি ছিল, ‘করোনা ভ্যাকসিন মৃত্যুর কারণ। উদাহরণ হিসাবে ভারত জাগরণ আন্দোলনের তরফে একটি প্রচারপত্রের বিজ্ঞাপন তুলে ধরে। ওই বিজ্ঞাপনে লেখা রয়েছে, ‘কার্তিকার সুবিচার। শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ। দয়া করে সতর্ক ও সচেতন হন।
২০ বছর বয়সি কারুন্যা এবং ১৮ বছর বয়সি রিথাইকার করোনা ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে মৃত্যু হয়েছে। একইসঙ্গে ওই প্রচারপত্রের মাধ্যমে জনগণের দিকে প্রশ্ন ছোঁড়া হয়েছে যে, ‘শিশু, যুবক-যুবতি বা যে কোনও মানুষের করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার কি প্রয়োজনীয়তা আছে?’ তাদের আরও প্রশ্ন, ‘এই ভ্যাকসিন মানবদেহে প্রয়োগের আগে উপযুক্ত পরীক্ষায় কি পাশ করেছে?’ এই ভ্যাকসিন নেওয়ার পর সাধারণ মানুষ কতটা সুরক্ষিত?’ তাছাড়া আরও প্রশ্ন তোলা হয়, ‘এখনও পর্যন্ত এই ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য কতজনের মৃত্যু হয়েছে, আর কতজন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তার পরিসংখ্যান যেন জানায় সরকার ?’
কলকাতা ও নদিয়া থেকে আগত ৪ আগন্তুকের এই ধরনের করোনা ভ্যাকসিন বিরোধী প্রচারে হতচকিত হয়ে যান সাঁতুড়ি এলাকার বাসিন্দারা। তারপরেই পুলিশে খবর দেওয়া হলে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়।