বছর দেড়েক আগে সরকারি হোম থেকে পালিয়ে গিয়েছিল কয়েকজন কিশোর। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের বহরমপুরের কাজী নজরুল ইসলাম সরকারি হোম থেকে নিখোঁজ হয়ে গেল ৪ জন কিশোর। প্রাথমিকভাবে অনুমান, হোমের ভিতরের গ্রিল কেটে তারা পালিয়ে যায়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। একইসঙ্গে এই ঘটনায় হোমের নিরপত্তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। কিশোরীরা গ্রিল কাটল তারপরেও কেন টের পেল না কর্তৃপক্ষ। সেই প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছে বিভিন্ন মহলে।
আরও পড়ুন: স্কুলে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ ৫ ছাত্রী, ৮ ঘণ্টায় উদ্ধার পুলিশের
জানা গিয়েছে, সোমবার হোম কর্তৃপক্ষের নজরে আসে যে ওই ৪ কিশোর নিখোঁজ রয়েছে। এরপরেই তাদের হোমের বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করা হয়। কিন্তু, তাদের পাওয়া যায়নি। পরে দেখা যায়, হোমের গ্রিল কাটা অবস্থায় রয়েছে। তা দেখেই হোম কর্তৃপক্ষের অনুমান, ৪ জন গ্রিল কেটে পালিয়েছে। যদিও ঘটনার পরে মুখে কুলুল এঁটেছে হোম কর্তৃপক্ষ। এদিনের ঘটনায় তাদের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এই অবস্থায় হোম কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অন্যান্য আবাসিকদের অভিভাবকরা। তাদের বক্তব্য, হোম কর্তৃপক্ষ তাদের সন্তানদের সঙ্গে নিয়মিত দেখা করতে দেয় না। ফলে তারা কী অবস্থায় থাকছে তা তারা জানতে পারছেন না। একইসঙ্গে নিরপত্তা নিয়েও তারা প্রশ্ন তুলেছেন।
শিউলি মান নামে এক মহিলা জানান, তাঁর মেয়ে এই হোমেই রয়েছে। ৪ দিন আগে মেয়ের সঙ্গে দেখা করেছেন। তারপর আর তার মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি হোম কর্তৃপক্ষ। তবে হোম থেকে ৪ কিশোরের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার কথা শুনেই তিনি আতঙ্কিত। হোমে তিনি নিরপাদ বোধ করছেন না। তাই এখন তিনি মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যেতে চাইছেন। এই অবস্থায় সরকারি হোমে কেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা রক্ষী নেই? হোমের গ্রিল কেটে পালালেও কেন নিরাপত্তারক্ষীদের চোখে পড়ল না? নাকি এর পিছনে অন্য রহস্য রয়েছে তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
উল্লেখ্য, গত বছরের মার্চে এই কাজী নজরুল ইসলাম হোম থেকেই ১১ জন কিশোর নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। সেই সময় হোমের নিরপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ঘটনায় চাপের মুখে পড়ে হোমের তরফে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল। এছাড়াও থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল। ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেই সময় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল বহরমপুরে। ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় প্রশ্নের মুখে পড়ল হোম কর্তৃপক্ষ।