করোনা আতঙ্কের মধ্যেই রাজ্যে নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে কালাজ্বর। রাজ্যের ১১ টি জেলায় কমপক্ষে ৬৫ জন এখনও পর্যন্ত কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে এই আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আর তাতেই উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্যকর্তারা। একেই করোনার সংক্রমণ প্রতিদিন ঊর্ধ্বমুখী, তার ওপর ডেঙ্গুর প্রকোপ রয়েছে। এই অবস্থায় কালাজ্বর বাড়ার ফলে স্বাস্থ্য কর্তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য ভবন থেকে কালাজ্বর নিয়ে সমীক্ষা চালানো হয়েছে। পাশাপাশি রোগ নির্মূল করতে পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। এর জন্য আক্রান্তদের পাকা বাড়ি ও শৌচালয় করে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছ এ বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, আক্রান্তদের চিহ্নিত করে তাদের পাকা বাড়ি করে দেওয়া হবে। রোগীকে নিখরচায় ওষুধ দেওয়ার পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করা হবে। সেই সঙ্গে রোগী পিছু মাসে হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। তবে এখনও পর্যন্ত ৬৫ জনের শরীরে কালাজ্বরের সংক্রমণ হলেও রক্ত পরীক্ষা করলে হয়তো আরও বেশ কয়েকজনের আক্রান্তের খবর পাওয়া যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, স্যাঁতস্যাঁতে মাটির বাড়ি, মেঝেতে বা দেওয়ালে বালি মাছি ডিম পাড়ে। এই মাছির শরীরে বসবাসকারী পরজীবী দ্বারা কালাজ্বরে আক্রান্ত হয় মানুষ।
কী কী উপসর্গ দেখা দিতে পারে?
কালাজ্বরে সংক্রমিত হলে মানুষের ওজন কমে যায়, খিদে কমে যায়, বমি বমি ভাব থাকে, শরীরের চামড়া শুকিয়ে যায়, রক্তাল্পতা দেখা দেয়, ১৪ দিনের বেশি জ্বর থাকে প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দেয়। এক সময় রাজ্য থেকে পুরোপুরি কালাজ্বর নির্মূল হয়ে গিয়েছিল। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মূলত বিহার, উত্তরপ্রদেশ ঝাড়খন্ড থেকে আসা মানুষদের থেকেই এই রোগ ছড়াচ্ছে। কোনও বেসরকারি ল্যাবে এই রোগ ধরা পড়লে তাদের দ্রুত জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানাতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ রাজ্যে কালাজ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি মালদহে। এর পাশাপাশি উত্তর দক্ষিণ দিনাজপুর, কালিম্পং, দার্জিলিং, বাঁকুড়া প্রভৃতি জেলায় কালাজ্বরে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন ২০১৭ সালে কালাজ্বর মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। কিন্তু ,ফের কালাজ্বর মাথাচাড়া দিয়ে ওঠায় উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্যকর্তারা।