কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল আরও ১ জনের। মঙ্গলবার সকালে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মৃত্যু হয় ৬ বছরের ছোট্ট স্নেহার। সোমবার সকালের ট্রেন দুর্ঘটনায় তার ছোট্ট শরীরের একাধিক জায়গায় গুরুতর আঘাত লেগেছিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সব চেষ্টা সত্বেও মঙ্গলবার সকালে মৃত্যু হয় শিশুটির।
আরও পড়ুন - রাত ৩টে ২০-তে শিয়ালদার ১৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে পৌঁছল ‘অভিশপ্ত’ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস
পড়তে থাকুন - 'মানুষকে ট্রেন ছেড়ে সাইকেল নিতে হয়…'কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনা, তোপ মমতার
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দুর্ঘটনার পর ৩৯ জনকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে আনা হয়। তাদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা ছিল আশঙ্কাজন। একজনের কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয়। স্নেহার শরীরের গুরুতর চোট থাকায় সঙ্গে সঙ্গে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে লড়াই শুরু করেন চিকিৎসকরা। অস্ত্রোপচার করে রক্তক্ষরণ বন্ধ করা হয়। রাখা হয় শিশুদের জন্য নির্দিষ্ট ICUতে। তার পরও অবস্থার অবনতি থাকে শিশুটির। মঙ্গলবার সকালে তার মৃত্যু হয়। এর ফলে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ১০। এদের মধ্যে রয়েছেন মালগাড়ির ২ চালক। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের গার্ড ও রেল মেইল সার্ভিসের এক কর্মী।
সোমবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ দার্জিলিং জেলার রাঙাপানি ও চটের হাট স্টেশনের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পিছনে দ্রুতগতিতে এসে ধাক্কা মারে একটি কন্টেনারবাহী মালগাড়ি। সংঘর্ষের অভিঘাতে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের শেষ কামরাটি মালগাড়ির ইঞ্জিনের ওপরে উঠে যায়। তার আগের দুটি কামরা ছিটকে পড়ে রেল লাইন থেকে। এই দুর্ঘটনায় মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত অন্তত ৫০ জন। কিন্তু কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটল তা নিয়ে শুরু হয়েছে জলঘোলা।
আরও পড়ুন - 'মৃত্যুর মুখে! ছিটকে পড়লাম, ট্রেনে চাপতে ভয় লাগছে,' HT Bangla-তে জানালেন কাঞ্চনজঙ্ঘার যাত্রী
রেলের তরফে দুর্ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হয়, মালগাড়ির চালকদের গাফিলতিতেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বেলা বাড়লে বদলে যায় দুর্ঘটনার তত্ত্ব। জানা যায়, সোমবার সকাল ৫.৩০ মিনিট থেকে রাঙাপানি স্টেশনের অটোমেটিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা খারাপ ছিল। সেখানে পেপার সিগন্যালে ট্রেন চলছিল। রাঙাপানি স্টেশনের স্টেশন মাস্টার পেপার সিগন্যাল দিচ্ছিলেন ট্রেনের চালকদের। সেই পেপার সিগন্যালের ভিত্তিতে ৯টি লাল সিগন্যাল অতিক্রম করার অধিকার দেওয়া হচ্ছিল চালকদের। তবে ট্রেনের গতিবেগ ওই অংশে ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটারের বেশি থাকতে পারবে না বলেও উল্লেখ করা ছিল পেপার সিগন্যালে। দুর্ঘটনার পর জানা যায়, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ও মালগাড়ির দুটি ট্রেনের চালকের কাছেই পেপার সিগন্যাল ছিল। প্রশ্ন উঠছে, কেন পর পর ২টি ট্রেনকে পেপার সিগন্যাল দিলেন রাঙাপানি স্টেশনের স্টেশন মাস্টার। আর পেপার সিগন্যাল নিয়ে কেন প্রবল গতিতে ট্রেন ছোটালেন মালগাড়ির চালক? কারণ মালগাড়ির গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার দুর্ঘটনার অভিঘাত এত বড় হওয়ার কথা নয়।