জাতীয় শিক্ষা নীতি (এনইপি) চালু হওয়ার পরে স্নাতকের প্রথম সেমিস্টারের ফল প্রকাশ হয়েছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর প্রথম সেমিস্টারের ফল প্রকাশ হতেই হতবাক হয়ে গিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া, শিক্ষক থেকে শুরু করে কর্তৃপক্ষ সকলেই। তাতে মূল বিষয়ে পাশ করেছেন মাত্র ৩ শতাংশ পড়ুয়া। আর ফেল করেছেন বাকি ৯৭ শতাংশ পড়ুয়া। ইতিমধ্যেই এমন খারাপ ফলাফলের কারণ জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে পড়ুয়াদের দাবি, অবিলম্বে এই ফলাফল প্রত্যাহার করতে হবে। এই দাবিতে সোমবার বিক্ষোভ করার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ডেপুটেশন দিলেন পড়ুয়ারা।
আরও পড়ুন: গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে সরিয়ে দিলেন রাজ্যপাল, জোর চর্চা
গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের ২৫টি কলেজের স্নাতকের প্রথম সেমিস্টারের ফল বেরিয়েছে। সোমবার ফলাফল প্রত্যাহারের দাবিতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়। সেই আন্দোলনে যোগ দেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ বিভিন্ন কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। পড়ুয়ারা ক্যাম্পাস জুড়ে মিছিল করার পর তাদের একটি প্রতিনিধিদল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে ডেপুটেশন তুলে দেয়। ডেপুটেশন এবং আন্দোলন কর্মসূচির নেতৃত্ব দেয় মালদা জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, জাতীয় শিক্ষা নীতি চালু হওয়ায় এবার স্নাতকে অনার্স অথবা পাস কোর্স নেই। তার বদলে মেজর এবং মাইনর কোর্স রয়েছে। মাত্র ৩ শতাংশ পড়ুয়া নিজেদের মূল বিষয়ে পাশ করেছেন।আর বাকিরা মূল বিষয়ে ফেল করলেও বাকি দু'টি প্রধান বিষয়ের যে কোনও একটিতে উত্তীর্ণ হওয়ায় দ্বিতীয় সেমেস্টারে চলে গিয়েছেন। তবে শেষ সেমিস্টারে তাদের পড়াশোনার চাপ আরও বাড়বে। কারণ আরও দু'টি নতুন বিষয় তাঁদের পাঠ্যক্রমে যুক্ত হওয়ায় মোট পাঁচটি বিষয় নিয়ে পড়তে হবে তাদের। তাই প্রকাশিত এই ফলাফল প্রত্যাহারের দাবি সহ একাধিক দাবি নিয়ে আন্দোলনে নামেন পড়ুয়ারা।
তাদের অভিযোগ, সিংহভাগ কলেজে প্রথম সেমিস্টারের সিলেবাস শেষ হয়নি। তার আগেই পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। তার জেরে ফলাফল এরকম খারাপ হয়েছে। মালদা জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি প্রসূন রায় বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য, আমাদের সিলেবাস আগে সম্পন্ন করা হোক। তারপরে মূল্যায়ন করা হোক। অথচ ক্লাস ঠিকমতো হচ্ছে না, তারপরেও মূল্যায়নের নামে হাজার হাজার পড়ুয়াকে ফেল করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে।’ তাঁর আরও অভিযোগ, অনেক পড়ুয়া কলেজে আসছে না। আবার শিক্ষকরাও ক্লাস নিতে অনীহা দেখাচ্ছেন। সেই বিষয়টি নিয়েও কমিটির তদন্ত করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।