একেবারে ঘরের মধ্যে সাক্ষাৎ মরণদূত। প্রথমটা ভালো করে বুঝতে পারেননি ডুয়ার্সের ওই পরিবার। টিনের চালার ঘর। নীচে প্রশস্ত বিছানা। সেখানে পরিবারের লোকজন শুয়েছিলেন। এটাই ওই বাড়ির শোয়ার ঘর। এখানেই নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছিলেন পরিবারের লোকজন। কিন্তু টিনের চালার ঘরের উপর দিকে তাকাতেই একেবারে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। দেখা যায় চিনের চালার মধ্যে কিছু একটা লেজের মতো দেখা যাচ্ছে। ডুয়ার্সের নাগরাকাটা স্কুল পাড়া এলাকার ঘটনা।
এনিয়ে কিছুটা সন্দেহ হয় ওই পরিবারের বধূ মালা টোপ্পোর। ভালো করে দেখার পরে তিনি আচমকা শুনতে পান ফোঁস ফোঁস আওয়াজ। আর বুঝতে দেরি করেননি তিনি। সাক্ষাৎ মৃত্যু দূত লুকিয়ে রয়েছে ঘরের মধ্য়ে। টিনে চালার কাঠামোর মধ্য়ে লুকিয়ে ছিল বিরাট আকৃতির সাপটি। তিনি এরপর পরিবারের লোকজনকে ডাকাডাকি শুরু করে দেন। পাড়ার লোকজনও জড়ো হয়ে যান। এরপর নাগকাটার সর্পপ্রেমী যুবক সৈয়দ নইম বাবুনকে খবর দেওয়া হয়। তিনি খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে চলে আসেন। তিনি এসে টিনের চালার সিলিং থেকে ওই সাপটিকে উদ্ধার করেন। এরপর সাপটিকে নিরাপদ জায়গায় বনাঞ্চলে ছেড়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
তবে এবারই প্রথম নয়, মাঝেমধ্য়ে ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকায় বিশাল আকৃতির অজগরের দেখা মেলে। এমনকী খাটের তলায় শুয়ে থাকে অজগর। এমন একাধিক নজির রয়েছে। চা বাগান সংলগ্ন এলাকাতেও এই ধরনের পাইথনের দেখা মেলে।
তবে এক্ষেত্রে সাপটিকে উদ্ধার করার পরে এটি পরীক্ষা করে দেখা হয়। দেখা গিয়েছে সাপটি আসলে ইন্ডিয়ান রক পাইথন প্রজাতির। সেই সাপটি কোনও ভাবে টিনের চালার মধ্য়ে উঠে গিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সেটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। বনদফতর জানিয়েছে, সাপটিকে আপাতত জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে অজগর নিয়ে নানা সময়েই বাসিন্দাদের সচেতন করা হয়। মালবাজার, নাগরাকাটা, বানারহাট সহ ডুয়ার্সের বিভিন্ন জায়গায় অজগরের দেখা মেলে।