আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠল প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা নিশীথ প্রামাণিকের আপ্ত সহায়কের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, নিশীথের ব্যক্তিগত সচিব পরিমল রায় ভোটে প্রার্থী করা এবং চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কয়েক লক্ষ টাকার প্রতারণা করেছেন। এই ঘটনায় ময়নাগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে পরিমল রায়ের বিরুদ্ধে। তার ব্যক্তিকে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: পঞ্চায়েতের উপপ্রধান থেকে শাহের ডেপুটি, ভোটে কুপোকাত নিশীথ, এবার কী করবেন?
জানা গিয়েছে, বিশ্বনাথ শীল নামে এক বিজেপি নেতা পরিমলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিশ্বনাথ অভিযোগ জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে তাঁকে বিধানসভায় বিজেপির প্রার্থী করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন পরিমল। সেই প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বেশ কয়েকবার টাকা নিয়েছেন। এছাড়া, বিশ্বনাথের এক আত্মীয়-সহ আরও বেশ কয়েকজনকে চাকরি দেওয়ার নাম করে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ। নিশীথের আপ্ত সহায়কের বিরুদ্ধে দলেরই এক নেতার এরকম অভিযোগ সামনে আসায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে উত্তরবঙ্গের রাজনীতিতে।
বিশ্বনাথের অভিযোগ, প্রতিশ্রুতির পরেও ২০১৬ সালে তাঁকে প্রার্থীও করা হয়নি। এমনকী তাঁর আত্মীয়রা কেউই চাকরি পায়নি। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার পরিমলকে চাপ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু টাকা এবং চাকরি কোনটাই পাননি তারা। শেষ পর্যন্ত তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। জানা গিয়েছে, বিশ্বনাথ শীল ময়নাগুড়ি ব্লকের দক্ষিণ মাধবডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা। আগে মেখলিগঞ্জের উছলপুকুরিতে থাকতেন তিনি। বিশ্বনাথ আগে সিপিএমে ছিলেন। ২০১৪ সালে তিনি সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। ২০১৬ সালে মেখলিগঞ্জের বিজেপির মণ্ডল সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন।
বিশ্বনাথ অভিযোগ করেছেন, নিশীথ প্রামাণিক নিজে দিল্লিতে চাকরির ব্যবস্থা করে দিতেও রাজি হয়েছিলেন। তবে ভিন রাজ্য হওয়ায় সেই প্রস্তাবে রাজি হননি তাঁর আত্মীয়রা। অভিযোগ, এরপর তাঁর আপ্ত সহায়ক তাঁকে ফোন করে একটি জায়গায় দেখা করে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নেন।
বিশ্বনাথের আরও অভিযোগ, তাঁর কয়েকজন আত্মীয়সহ গ্রামের বেশ কয়েকজন পরিমলকে কয়েক দফায় ২০ লক্ষেরও বেশি টাকা দিয়েছেন। এর মধ্যে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে ১৭ লক্ষ টাকা। তবে এখনও পর্যন্ত কারও চাকরি হয়নি, টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি। এমনকী চাপে পড়ে বিশ্বনাথ নিজের সম্পত্তি বিক্রি করে ছেলেদের সেই টাকা দিয়েছেন বলে জানান।
শুধু তাই নয় অভিযোগ, পরিমল কালীপুজোয় তার মাকে বিশ্বনাথের বাড়ি নিয়ে এসেছিলেন। তখন তিনি টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। এমনকী তার মাকে বিশ্বনাথের বাড়িতে ফেলে রেখে চলে যান পরিমল। তারপর আর তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তাই শনিবার বাধ্য হয়ে তিনি ময়নাগুড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার খান্ডবাহালে উমেশ জানিয়েছেন, নিশীথ প্রামাণিকের আপ্তসহায়কের বিরুদ্ধে যে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।