কোচবিহারের তুফানগঞ্জে এক মহিলার চুলের মুঠি ধরে গাড়িতে তোলার অভিযোগ উঠেছিল এক পুরুষ পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে। শুধু তাই মহিলার বুকে ধাক্কা দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছিল। অথচ কোনও মহিলা পুলিশ ছিল না। বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হতেই পদক্ষেপ করল পুলিশ। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীকে ক্লোজ করা হল। তুফানগঞ্জ থানার এএসআই জগদীশ ঘোষকে ক্লোজ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: রাতের কলকাতায় ফের কর্তব্যরত পুলিশকে নিগ্রহ, ছিঁড়ে দেওয়া হল উর্দি, গ্রেফতার ২
কী ঘটেছিল?
জানা যাচ্ছে, ঘটনার সূত্রপাত পারিবারিক জমি নিয়ে বিবাদকে ঘিরে। জমি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে তুফানগঞ্জ ১ নম্বর ব্লকের নাটাবাড়ি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাড়ালজানি এলাকায় একটি সালিশি সভা বসে। গত ৯ মে গ্রামে এই সালিশি সভার আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু, অভিযোগ, সেই সভাতেই তৃণমূল নেতা জাহাঙ্গির আলি মমতাজ খাতুন নামে ওই মহিলাকে বেধড়ক মারধর করে।
সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিচার চেয়ে তুফানগঞ্জ থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন ওই মহিলা। কিন্তু, পুলিশ তার অভিযোগ নিতে চায়নি। ফলে তাকে ফিরিয়ে দিতে বলা হয় বলে অভিযোগ। সেই ঘটনার প্রতিবাদে তিনি পঞ্চায়েত দফতরের সামনে রাস্তায় শুয়ে পড়ে বিক্ষোভ জানান। এমনকী বিচার না পেলে তিনি আত্মহত্যা করবেন বলেও হুমকি দেন। তখন ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছয় তুফানগঞ্জ থানার পুলিশ। এরপর পুলিশ মহিলাকে সেখান থেকে সরে যেতে বলে। কিন্তু, মহিলা তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতারের দাবিতেই অনড় থাকেন। ফলে তিনি বিক্ষোভ চালিয়ে যান। এরপরেই ঘটে বিপত্তি।
অভিযোগ, মহিলা বিক্ষোভ তুলে না নেওয়ায় এএসআই জগদীশ ঘোষ জোর করে সেখান থেকে মহিলাকে সরানোর চেষ্টা করেন। তাকে ধাক্কা দিয়ে, চুলের মুঠি ধরে গাড়িতে তোলা হয় বলে অভিযোগ। এদিকে, এক মহিলাকে এক পুরুষ পুলিশ কর্মী এভাবে গাড়িতে তোলায় শোরগোল পড়ে যায় তুফানগঞ্জে। তারওপর তৃণমূল নেতার নাম জড়িত থাকায় ঘটনায় রাজনৈতিক রঙ লাগে।
ঘটনায় তৃণমূলের নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান বিরোধীরা। এ নিয়ে তুফানগঞ্জে রাজনৈতিক তরজা শুরু হতেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। তারপরে ব্যবস্থা গ্রহণ করে জেলা পুলিশ। কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য জানান, জগদীশ ঘোষকে ক্লোজ করা হয়েছে। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করা হচ্ছে। সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।