কুকুরের হামলায় আশঙ্কাজনকভাবে আহত এক রোগীর প্রাণ বাঁচালেন জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা। কুকুরের দল ওই রোগীর চোখ, কান, গলা ও নাক মারাত্মকভাবে খুবলে খেয়েছিল কুকুর। এই অবস্থায় কলকাতা ছাড়া ওই রোগীর চিকিৎসা সম্ভব নয় বলে প্রথমে মনে করা হচ্ছিল। তবে পুরুলিয়ার দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজের ইএনটি বিভাগেই তা সম্ভব হয়েছে। চিকিৎসক মহলের একাংশের মতে, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে শুধু কলকাতার হাসপাতালেই নয়, জেলা হাসপাতালও যে উন্নত হচ্ছে তা বোঝাই যাচ্ছে।
রাজ্যের জেলাতেও যে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নত হয়েছে তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. অজয় চক্রবর্তী। পুরুলিয়ার দেবেন মাহাতো সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই চিকিৎসা শুধু অবিশ্বাস্য নয়, অসাধ্য সাধনও বটে। মেডিক্যাল কলেজগুলি তাদের দক্ষতা দায়বদ্ধতা নিয়ে এগিয়ে আসছে। এটা খুবই ভাল লক্ষণ।’ হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই রোগীর নাম মহাদেব গোপ। তিনি পুরুলিয়ার নাদিয়ারার বাসিন্দা। স্নান করতে গিয়ে একদল কুকুরের দল তাকে তাড়া করেছিল। কুকুরের হামলায় মারাত্মকভাবে জখম হয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। তার গাল, ঠোট মুখ, ও নাক খুবলে নিয়েছিল কুকুর। চোখের বাঁ দিকের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এরপর তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথমে তাকে সার্জারি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখান থেকে ইএনটি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকদের মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়।
চিকিৎসকরা জানান, সাধারণত কুকুরের কামড়ের ক্ষেত্রে রোগীর সেলাই করা হয় না। তবে এক্ষেত্রে সেলাই করা ছাড়া উপায় ছিল না। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কা ছিল। তবে সেলাইয়ের আগে জলাতঙ্কের ইনজেকশন এবং ক্ষতস্থানে ইমিউনোগ্লোবিউলিন দেওয়া হয় বলে চিকিৎসকরা জানান। বর্তমানে ওই রোগী সুস্থ রয়েছে বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। প্রসঙ্গত, কলকাতার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার জন্য চাপ বাড়ছে। সে ক্ষেত্রে জেলা হাসপাতালগুলির আরও উন্নয়ন হলে কলকাতা হাসপাতালে চাপ কমবে। সেইসঙ্গে যাতায়াতের ক্ষেত্রে মানুষের অসুবিধা হবে বলে মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ।