ত্রিবেণীতে কুম্ভ। বাংলার কুম্ভ। ১১ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছে। শেষ হবে ১৩ ফেব্রুয়ারি। অনেকেই আসছেন সেই কুম্ভে। নানা ধরনের সাধু এসেছেন সেখানে। কেউ নাগা, কেউ অঘোরী। কারোর পরনে কিচ্ছু নেই। একটা সুতোও নেই। মাথায় একরাশ জটা। সারা শরীরে ছাই ভষ্ম। ধুনি জ্বালিয়ে বসে রয়েছেন। কারোর পরনে আবার গেরুয়া বস্ত্র। আশীর্বাদ দিচ্ছেন ভক্তদের। কেউ আবার অঘোরী। কালো বস্ত্র তাঁদের পরনে।
সাধুদের সাধক জীবনের নির্দিষ্ট নাম রয়েছে। তবে ভক্তরা অবশ্য় ছোট করে তাঁদের নানা নামে ডাকেন। তেমনই এক সাধুর দেখা মিলল ত্রিবেণীর কুম্ভে। তিনি বাঙালি। আসল বাড়ি বাংলারই এক প্রান্তিক জেলায়। তবে বর্তমানে তিনি অসমের কামাখ্য়া থাকেন। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলায় তিনি ফেলে আসা জীবনের কথা জানালেন।
সাধুরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাঁদের পূর্বাশ্রমের কথা বলেন না। তবে কেউ কেউ আবার বলেও ফেলেন। ঠিক যেভাবে আইআইটি বাবার পূর্বাশ্রমের কথা জানা গিয়েছে। অর্থাৎ সাধু হওয়ার আগের জীবনের কথা।
ত্রিবেণীর কুম্ভে পাশাপাশি বসেছিলেন তিনজন সাধু। সকলেরই পরনে গেরুয়া বস্ত্র। চুপ করে বসে রয়েছেন তাঁরা। একজন বিজয়ানন্দ ব্রহ্মচারী। একজন ভবানন্দ ব্রহ্মচারী ও অপরজন হলেন গোপাল গিরি মহারাজ। তিনজনে এসেছেন তাঁরা ত্রিবেণীর কুম্ভে।
মুখ খুললেন বিজয়ানন্দ ব্রহ্মচারী। তিনি বলেন, ৭২-৭৬ সাল। এই বাংলারই একটি ব্লকের অ্যাকাউন্টস বিভাগে চাকরি করতাম। তখন চুরির যা নজির দেখেছি সেটা বলার কথা নয়। একেবারে পুকুর চুরি হত। প্রতিবাদ করলেই নানা হুমকি। এখন দুর্নীতি কী দেখছেন! তখনও দুর্নীতি কিছু কম ছিল না। সেই দুর্নীতিতে তিতিবিরক্ত হয়ে চাকরিটা ছেড়ে দিলাম। এরপর প্রিন্টিংয়ের পেশাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তাতেও মন লাগল না। এরপর বেছে নিলাম এই জীবন। সাধুর জীবন। এখন বেশিরভাগ সময়ই কামাখ্য়াতে থাকি। পূণ্যস্থানে ঘুরে বেড়াই।
ফেলে আসা জীবনের কথা গড়গড় করে বলে চলেন ওই সাধু। আসলে গড়পরতা জীবনের সঙ্গে মেলে না এই সাধুদের জীবন। বড় বিচিত্র এই জীবন।
অপর এক বাঙালি সাধুর সঙ্গে দেখা মিলল এই ত্রিবেণীর কুম্ভে। তিনি নাগা সাধু। বেশিরভাগ সময় গঙ্গাসাগরে থাকেন। এবার তিনি এসেছেন ত্রিবেণীতে। নাগা সাধু মানেই যে রাগী চেহারা চোখের সামনে ভেসে ওঠে তার থেকে কিছুটা ভিন্ন। তিনি বেশ হাসিখুশি। একমুখ দাড়ি।গায়ে ছাই ভষ্ম। তার মাঝেই মুচকি হাসছেন তিনি। সকলের মঙ্গল কামনা করছেন। রাগী নন, তিনি হাসিখুশি।