রেল স্টেশনে এক অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের মৃত্যুতে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল। ঘটনায় রেল কর্মী এবং জিআরপির বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন প্রাক্তন প্রধান শিক্ষকের পরিবার। ট্রেনের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ওই ব্যক্তি। ট্রেনের যাত্রীরা তাঁকে স্টেশনে নামিয়ে দেন। কিন্তু, রেলকর্মী বা জিআরপির তরফে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। তার ফলে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে পরিবার। এই অভিযোগ তুলে স্টেশনে বিক্ষোভ দেখান পরিবারের সদস্যরা। মৃতের নাম প্রদীপ বিশ্বাস। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার দুপুরে নদিয়ার রানাঘাট-কৃষ্ণনগর ট্রেন লাইনে।
আরও পড়ুন: তীর্থ সেরে ফেরার পথে ট্রেনের মধ্যে মৃত্যু, দীর্ঘক্ষণ দেহ পড়ে রইল স্টেশনে
জানা গিয়েছে, প্রদীপ বিশ্বাস কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা। তিনি কৃষ্ণনগর লাগোয়া গোবরাপোতা নেতাজি হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তিনি ডাউন ট্রেনে করে যাচ্ছিলেন। সেই সময় তাহেরপুর স্টেশনের কাছে পৌঁছতেই ট্রেনের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তখন ট্রেনের অন্যান্য যাত্রীরা তাঁকে ট্রেন থেকে তাহেরপুর স্টেশনে নামিয়ে দেন। খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছন প্রদীপবাবুর পরিবারের লোকজন। তারা সেখানে তাঁকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল ৯ টায় শিয়ালদহগামী ট্রেনে চেপেছিলেন প্রদীপ বিশ্বাস। এরপর তাহেরপুর স্টেশনের কাছাকাছি পৌঁছতেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ট্রেন থেকে নামানোর পরেই প্রদীপ বাবুকে স্টেশনে বসিয়ে দেওয়া হয়। তবে ঘটনার প্রায় আধ ঘণ্টা পরে পরিবারের লোক সেকথা জানতে পারেন। এরপর বেলা ১১ টা নাগাদ তারা সেখানে পৌঁছন।
পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য, প্রদীপ বাবুর ফোন থেকেই এক রেল কর্মী তাদের অসুস্থতার কথা জানিয়েছিলেন। তবে তারা পৌঁছে দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মে রোদের মধ্যে একটা পিলারে হেলান দেওয়া অবস্থায় প্রদীপ বাবুর মৃতদেহ দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে বীরনগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাদের জানান প্রদীপ বাবুর আগেই মৃত্যু হয়েছে। যদিও রেলের বক্তব্য, প্রদীপ বাবুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তিনি আগেই মারা গিয়েছিলেন। তবে সেই দাবি মানতে নারাজ পরিবার। তাদের বক্তব্য, রেলস্টেশনের বুকিং ক্লার্ক সুজিত সরকার প্রদীপ বাবুর ফোন থেকেই পরিবারকে জানিয়েছিলেন সেকথা। ফোন লক করা ছিল ফলে তিনি তখনও বেঁচেছিলেন। ঘটনায় দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ মৃতের পরিবার স্টেশনে বিক্ষোভ দেখান।
শিয়ালদহ ডিভিশনের তরফে জানানো হয়েছে, ওই ব্যক্তিকে বীরনগরের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল জিআরপি। দুপুর ১:৩০ নাগাদ খবর আসে তিনি মারা গিয়েছেন। ফলে তিনি যে দীর্ঘক্ষণ রেল স্টেশনে পড়ে ছিলেন সেই দাবি মিথ্যে।