থানা থেকে একটি ফোন পেয়ে এক ব্যক্তি জানতে পারলেন তিনি নিখোঁজ! অবাক হয়ে মাথা ঘুরে মাটিতে পড়ে যাওয়ার জোগাড় তাঁর। কারণ তিনি ভাঙা পা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তারপরই থানা থেকে ফোন আসে। কী বলা হল পুলিশের পক্ষ থেকে? জানা গিয়েছে, পুলিশের কাছ থেকে বৈদ্যবাটীর তেঁতুলতলা ধানমাঠ এলাকার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দাস জানলেন, তিনি ‘নিখোঁজ’। এমনকী হাসপাতাল থেকে ‘পালিয়ে’ এসেছেন বলে অভিযোগ। বিস্তর জলঘোলা হওয়ার পর কাগজপত্র দেখে ভ্রান্তি কাটল। তাহলে কী হয়েছে? অন্য এক রোগীর ‘ডিসচার্জের’ কাগজ তাঁকে ধরিয়ে ছুটি দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে।
পরিবার সূত্রে খবর, বিশ্বজিৎ সাইকেল খেলা দেখিয়ে রোজগার করেন। এটাই মূলত তাঁর পেশা। গত ১৯ জুলাই সাইকেল দুর্ঘটনায় তাঁর পায়ে ব্যাপক চোট লাগে এবং ভেঙে যায়। ১১ অগস্ট শ্রীরামপুরের ওয়ালশ হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয়। তারপর হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সোমবার ছুটি পাবেন তিনি। সেই ঘোষণা অনুযায়ী, ছেলে নোটন তাঁকে বাড়ি ফিরিয়ে আনেন। এই পর্যন্ত সব ঠিক ছিল।
তাল কাটে মঙ্গলবার। কারণ শ্রীরামপুর থানা থেকে বাড়িতে ফোন করে বলা হয়, বিশ্বজিৎ হাসপাতাল থেকে ‘পালিয়ে এসেছেন’। অবিলম্বে থানায় দেখা করতে বলা হয়। তখন গোটা বাড়ি তোলপাড়। তখনই তাঁরা ‘ডিসচার্জ’–এর কাগজে দেখেন এবং গোটা বিষয়টি সামনে আসে। কাগজটি ভদ্রেশ্বরের বাসিন্দা জনৈক কিশোরী সাউয়ের। ছেলে নোটন থানায় গিয়ে সব পুলিশকে দেখান। বোঝা যায়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিশোরীর কাগজ নিয়ে বিশ্বজিৎকে ‘ডিসচার্জ’ করেছেন।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বিশ্বজিৎ বলেন, ‘একমাস হাসপাতালে ছিলাম। মালাইচাকি ভেঙে শয্যাশায়ী। পালাব কী করে! আমি গরীব মানুষ। থানা–পুলিশে ভয় লাগে। তাই আমি নিখোঁজ শুনে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম।’ হাসপাতাল সূত্রের খবর, বিশ্বজিতের কাগজপত্র ওয়ার্ডে থাকলেও তাঁকে শয্যায় না দেখে রাতে নার্সরা বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আনেন। তখনই হাসপাতাল থানায় খবর দেয়। প্রশ্ন উঠছে, গাফিলতির দায় কার?