এবার পুলিশের হেফাজতে বন্দি মৄত্যুর ঘটনায় তোলপাড় হয়ে উঠল নরেন্দ্রপুর। সরাসরি পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে। নরেন্দ্রপুর থানায় এই ঘটনা ঘটায় কংগ্রেস প্রতিবাদে নেমে পড়েছে। এমনকী এই ঘটনায় পুলিশ সুপারের কাছে গিয়ে নরেন্দ্রপুর থানা এবং তদন্তকারী অফিসার অর্নব চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃত বন্দির পরিবারের সদস্যরা। আর তারপরই ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মিস পুষ্পা।
ঠিক কী ঘটেছে নরেন্দ্রপুরে? পরিবার সূত্রে খবর, গড়িয়ার বাসিন্দা সুরজিত ওরফে সাহেব সর্দারকে ১৩ এপ্রিল দুপুরে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। আর পুলিশের নথিতে ১৪ এপ্রিল গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এই বন্দির বিরুদ্ধে চুরির মামলা দায়ের করে পুলিশ। এর আগেও নরেন্দ্রপুর থানায় ছিনতাইয়ের ঘটনার অভিযোগ দায়ের হয় সাহেব সর্দারের নামে। এই বন্দির বিরুদ্ধে আগে অভিযোগ রয়েছে সোনারপুর থানাতেও। একাধিকবার গ্রেফতারও করা হয়েছিল সাহেবকে। যুবক সাহেব নেশাগ্রস্ত থাকা অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। নেশা ছাড়ানোর জন্য দু’বার তাকে নেশামুক্তি কেন্দ্রে ভর্তিও করা হয়েছিল।
পুলিশ কী তথ্য দিচ্ছে? পুলিশ সুত্রে খবর, গত ২০ এপ্রিল থানা লকআপেই অসুস্থবোধ করে সুরজিত ওরফে সাহেব। তখন প্রথমে তাকে সোনারপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় আবার ওখান থেকে তাকে এমআর বাঙুর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই ২১ এপ্রিল শুক্রবার মৄত্যু হয় সাহেবের। আজ, বন্দির দেহের ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। পরিবারকে সব জানানো হয়েছে। কিন্তু পরিবার অভিযোগ তুলছে বন্দি সাহেবকে অত্যাচার করে মেরে ফেলা হয়েছে। যা সঠিক তথ্য নয়।
আর কী জানা যাচ্ছে? মৃতের দাদা সুব্রত সর্দার জানান, তাঁদের কাছ থেকে টাকা চাওয়া হয়। দু’দফায় মোট ২০ হাজার টাকা দিয়েছেন তারা। আরও টাকা চাওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেটা দিতে না পারায় পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে তাঁর ভাইকে। তাই এই ঘটনার যথাযথ তদন্ত দাবি করেন তাঁরা। পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৄত্ব। প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘নরেন্দ্রপুর থানা অন্যায়ের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ধারণ করেছে। এই ঘটনার ন্যায্য বিচার পেতে প্রয়োজনে আদালতে যাবো। প্রয়োজনে সিবিআই তদন্তও চাইব।’ পুলিশ সুপারের অফিসের পাশাপাশি কংগ্রেস নেতারা নরেন্দ্রপুর থানায় যান। আর মৃতের পরিবারের সঙ্গেও দেখা করেন।