মাছ ধরতে গিয়ে মাঝ নদীতে নৌকোর উপরেই বাঘের আক্রমণে বেঘোরে প্রাণ হারালেন এক মৎস্যজীবী। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবনের চিলমারির গভীর জঙ্গলে। শুক্রবার ভোররাতে গভীর জঙ্গল থেকে ফিরে আসার পথেই এই দুর্ঘটনাটি ঘটে যায়। সাঁতরে এসে নৌকায় হামলা চালায় একটি পূর্ণবয়স্ক বাঘ।
সুন্দরবন কোস্টাল থানার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই মৎস্যজীবীর নাম অন্ন দাস (৫০)। ওই মৎস্যজীবীদের কাছে জঙ্গলে প্রবেশের বৈধ নথিপত্র ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখছে বসিরহাট বনদফতর। সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতো মৃতের পরিবার ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছেন।
মৃতের সতীর্থ মৎস্যজীবীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকালে বসিরহাট সন্দেশখালি আতাপুর ঘাট থেকে মাছ ধরতেন রওনা দিয়েছিলেন মৎস্যজীবীদের একটি দল।
সারাদিন সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলের চরে মাছ ধরার পর শুক্রবার ভোর রাতে গ্রামের দিকে ফিরছিলেন তাঁরা। সেই সময় নৌকোর মধ্যেই বাঘের আক্রমণের কবলে পড়েন মৎস্যজীবীদের ওই দলটি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঘটনার সময় তাঁরা ওই নৌকার মধ্যে বসে ছিলেন। আচমকা পিছন দিক থেকে সাঁতরে এসে একটি বাঘ নৌকার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। নৌকোর একেবারে পেছনের দিকে বসেছিলেন মৎস্যজীবী অন্ন দাস। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগে বাঘটি অন্নবাবুর ঘাড়ে থাবা বসিয়ে তাঁকে টেনে জঙ্গলের দিকে নিয়ে এগোতে শুরু করে। মৎস্যজীবীকে টেনে নিয়ে ওই বাঘটি যখন সাঁতরে নদী পেরচ্ছিল, তখন বন্ধুকে বাঁচানোর জন্য হাতের সামনে থাকার লাঠি নিয়ে পাল্টা আক্রমণ চালান অন্যান্য মৎস্যজীবীরা। বেশ কিছুক্ষণ ধ্বস্তাধ্বস্তির পর অবশেষে মৎস্যজীবীকে ফেলে জঙ্গলের দিকে পালিয়ে যায় বাঘটি। কিন্তু ততক্ষণে গুরুতর আহত ওই মৎস্যজীবীর মৃত্যু হয়। এরপর অন্যান্য মৎস্যজীবীরা তাঁর দেহ উদ্ধার করে গ্রামে ফিরে আসেন।
ওই মৎস্যজীবীদের কাছে জঙ্গলে প্রবেশের বৈধ নথিপত্র ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখছে বসিরহাট বনদফতর। বনদফতরের তরফ থেকে বলা হয়েছে, মৎস্যজীবীদের বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও তাঁরা বিধি মানেন না। পেটের টানে হলেও যে জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ে তাঁদের। সেটাও বুঝতে হবে। প্রশাসনের তরফ থেকেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। মৎস্যজীবীরা বিধি মানছেন কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।