তিনি বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের যুব নেতা! নাম - আগুন মণ্ডল। অথচ, তাঁরা বাবা এবং মা - দু'জনই বাংলাদেশের নাগরিক! এটা কীভাবে সম্ভব? অসঙ্গতির এখানেই শেষ নয়। আরও জানা গিয়েছে, আগুন মণ্ডলের যে ভোটার কার্ড বা এপিক কার্ড রয়েছে, সেখানে তাঁর 'বাবার নাম'-এর জায়গায় জন্মদাতা বাংলাদেশি বাবার কোনও উল্লেখ নেই। বদলে অন্য ব্যক্তির নাম রয়েছে। আর, এ নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
বঙ্গদেশে ভোট হতে এখনও প্রায় বছর খানেক বাকি। কিন্তু, ইতিমধ্যেই 'ভূতুড়ে ভোটার' নিয়ে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। একদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস মাঠে নেমে 'ভূত ধরা' শুরু করেছে। অন্যদিকে, বিজেপিও বলছে - ভোটার তালিকায় 'ভূত' যদি কেউ ঢুকিয়েই থাকে, তাহলে তা বাংলার শাসকদলই ঢুকিয়েছে।
এদিকে, কিছু দিন আগেই লাভলি খাতুন নামে এক মহিলা উঠে আসেন খবরের শিরোনামে। অভিযোগ, বাংলাদেশি নাগরিক লাভলি যে শুধুমাত্র ভারতের মাটিতে অনুপ্রবেশ করেছেন, তাই নয়। তিনি নিজের ভুয়ো ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করিয়েছেন। এবং সর্বোপরি তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে জিতে পঞ্চায়েত প্রধানও হয়েছেন! মালদার চাঁচলের এই ঘটনা সামনে আসার পর অবশ্য তাঁকে তাঁর সেই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
এই প্রেক্ষাপটে চর্চা শুরু হয়েছে মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির ঘোষপাড়া এলাকার অঞ্চল যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আগুন মণ্ডলকে নিয়ে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, তিনি নিজেও স্বীকার করেছেন যে তাঁর বাবা-মা বাংলাদেশি। কিন্তু, তাঁর দাবি তিনি ভারতীয়! তাঁর যুক্তি, তিনি একেবারে ছোটবেলাতেই জলঙ্গিতে তাঁর দাদুর বাড়িতে চলে আসেন। এখানেই বড় হয়ে ওঠেন।
প্রশ্ন উঠছে, দাদু কি তাহলে তাঁকে সরকারি নিয়ম মেনে দত্তক নিয়েছিলেন? নাকি অন্য কেউ তাঁর স্থানীয় অভিভাবক? কারণ, তা না হলে তাঁর ভোটার কার্ডে কেন বাবার নামের জায়গায় অন্য নাম লেখা রয়েছে? এই প্রশ্নগুলির অবশ্য কোও সদুত্তর মেলেনি। আগুনের মতে, এসবই ভিত্তিহীন অভিযোগ।
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। তাদের অভিযোগ, সীমান্ত লাগোয়া এই এলাকায় এমন ঘটনা নাকি প্রায়ই ঘটছে! যার খুব সামান্য অংশই প্রকাশ্য়ে আসে।
এমনকী, এই ঘটনা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ঘোষপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলেরই প্রধান ফিরোজ আলি! সংবাদমাধ্যমের সামনেই তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, 'যদি মিস্টার আগুন মণ্ডলের বাবার বাড়ি বাংলাদেশে হয়, তাহলে তিনি কীভাবে ভারতীয় নাগরিক হলেন? এটা বড় প্রশ্ন।' ফিরোজ আলি এও জানিয়েছেন যে এই ঘটনাটি নিয়ে তাঁরা উদ্বেগে রয়েছেন।