অচেনা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এসেছিল c। সেখানেই কথা চলত। তারপর সম্পর্ক এগিয়ে চললে দু’জনের মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর বিনিময় হয়। আর লাস্যময়ী তরুণীর নম্বর থেকে ভিডিয়ো কল আসতেই তা রিসিভ করেন হাঁসখালির জনৈক স্কুলশিক্ষক। বিবস্ত্র অবস্থায় দু’জনের অন্তরঙ্গ মুহূর্ত বন্দি হয় ভিডিয়ো কলে। কিন্তু ফোন কাটতেই ওপার থেকে টাকা দাবি করা হল। এমনটা কথা না থাকলেও সেটা ঘটল। টাকা দিতে অস্বীকার করলে ওই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিয়ো দিয়ে ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগ তুলে কল্যাণীর সাইবার ক্রাইম থানার দ্বারস্থ হলেন ওই স্কুলশিক্ষক।
ঠিক কী ঘটেছে হাঁসখালিতে? স্থানীয় সূত্রে খবর, হাঁসখালি থানার বগুলা এলাকার বাসিন্দা ওই স্কুলশিক্ষকের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এপ্রিল মাসে একটি অপরিচিত প্রোফাইল থেকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আসে। মেয়েটির প্রোফাইলে ছিল সে ওড়িশার বাসিন্দা। আর ভুবনেশ্বরের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। বাংলার ইতিহাস এবং সংস্কৃতি বিষয়ে জানতে সে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চায়। স্কুলশিক্ষক সেটা দেন। তারপর ৮ এপ্রিল মেয়েটির হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে ভিডিয়ো কল আসে। কল রিসিভ করতেই দেখা যায় সে সম্পূর্ণ নগ্ন শরীর প্রদর্শন করছে। তখন ফোন কেটে দিতেই ওই নম্বর থেকে ফোন করে সাড়ে তিন হাজার টাকা দাবি করা হয়। আর টাকা দিতে অস্বীকার করলে স্কুলশিক্ষকের ছবি সুপার ইম্পোজ করা হয়। আর ভিডিয়ো স্কুলশিক্ষকের প্রোফাইলে থাকা বেশ কয়েকজনের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
তারপর ঠিক কী ঘটল? এই ঘটনার পর কল্যাণীর সাইবার ক্রাইম থানার দ্বারস্থ হন ওই স্কুলশিক্ষক। সেখানে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। কল্যাণী সাইবার ক্রাইম থানা সূত্রে খবর, সাইবার প্রতারণার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সাইবার ফাঁদ থেকে বাঁচতে হলে কোনও অপরিচিত ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করা যাবে না। প্রতারকরা এভাবেই অপরিচিতদের সঙ্গে ফেসবুকে বন্ধুত্ব পাতিয়ে ফোন নম্বর হাতিয়ে নিচ্ছে। তারপর ভিডিয়ো কল করে এসব করা হচ্ছে। চলছে সরাসরি ব্ল্যাকমেইল।
আর কী জানা যাচ্ছে? এই ঘটনা নিয়ে রানাঘাট মহকুমা আদালতের আইনজীবী কেয়া বিশ্বাস বলেন, মামলার কারণে অনেক সময় সরকারি কর্মচারীদের চাকরি নিয়ে সমস্যা হতে পারে। সম্ভবত এই ভয়েই সাইবার প্রতারণা চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে নিঃস্ব হয়ে যান তাঁরা। পুলিশের দাবি, সাইবার ব্ল্যাক মেইলিংয়ের মতো অপরাধ বেড়ে যাওয়ায় রাজ্য পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ অনেক বেশি তৎপর হয়েছে।