নির্লিপ্ত যুবকটি নিজের প্রেমিকা খুন হওয়ার ঘটনায় জানিয়েছিল, সে কিছু জানে না। মাথা কাজ করছে না। তারপর তদন্তে নেমে পুলিশ কর্তাদের চোখ কপালে উঠেছে। কারণ এই প্রেমিকই আসলে চারমাসের মধ্যে দুই প্রেমিকাকে খুন করেছে! ঠাণ্ডা মাথায় পরপর খুন করা হয়েছে। শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার ‘লেডি কিলার’ মহম্মদ আখতারকে দেখে বোঝা মুশকিল এই খুনের নেপথ্যে তার হাত রয়েছে। তবে একমাত্র সূচনা মণ্ডলই নন, আরও এক প্রেমিকাকে খুন করেছে আখতার।
সম্প্রতি মাটিগাড়া জোড়াব্রিজের তরুণী সূচনা মণ্ডল (১৯) নিয়োঁজ হয়ে যান। বিষয়টি নিয়ে পরিবারের সদস্যরা শিলিগুড়ির মাটিগাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তারপরই তদন্তে নামে পুলিশ। নানা পরিচিতদের সঙ্গে কথা বলতেই উঠে আসে মহম্মদ আখতার নামে যুবকের উপস্থিতি। তাঁর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন তরুণী। এই কথা জানতে পেরে পুলিশ ওই যুবকের উপর নজর রাখে। কিন্তু বুঝতে পারেনি এই ঘটনার সঙ্গে আখতারের যোগ থাকতে পারে। অগত্যা তাকে জেরা করে।
পুলিশ জেরা শুরু করতেই প্রথমে খানিকটা নির্লিপ্ত থাকে সে। পরে জানায় সে কিছুই বুঝতে পারছে না। তার মাথা কাজ করছে না। প্রেমিকার কোনও খোঁজ জানে না। এরপর শুরু হল দফায় দফায় জেরা। সেখানেই সে ভেঙে পড়ে। পুলিশ সূত্রে খবর, তরুণীর সঙ্গে শুরুটা ভালই ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিক্ততা বাড়ছিল। অশান্তি শুরু হয়েছিল। ঠিক চার মাস আগে ঝগড়া চলাকালীন সূচনাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে সে। আর প্রমাণ লোপাটের জন্য রেললাইনের ধারে দেহ পুঁতে দিয়েছিল।
এই তথ্য স্বীকারের পাশাপাশি পুলিশের জেরায় আখতার জানিয়েছে, সে আরও এক প্রেমিকাকে খুন করেছে। সেপ্টেম্বর মাসের ১ তারিখ মাটিগাড়া থেকে উদ্ধার হয় চাঁদমণি চা–বাগানের বাসিন্দা অনিতা মাহালির দেহ। অনিতার মা অভিযোগ করেন, স্বামীই খুন করেছে তাঁর মেয়েকে। কিন্তু তদন্তে নেমে জানা যায়, আখতারের সঙ্গে অনিতাও প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। আর অনিতাকেও ৩১ অগস্ট রাতে খুন করে সে। আর একই কায়দায় তাঁর দেহও পুঁতে দিয়েছিল মাটিতে।