দু’বছর পর বাড়ি ফেরার কথা ছিল আলিপুরদুয়ার ঘাগড়া এলাকার সঞ্জীব বর্মণের। এই পরিবারের ছোট ছেলে সঞ্জীব। দু’বছর পর ছেলের সঙ্গে দেখা হবে বলে আশায় ছিলেন সঞ্জীবের মা লক্ষ্মী বর্মণ। তবে দুর্গোৎসবেই শোকের ছায়া নেমে এল পরিবারে। পঞ্চমীর মধ্যরাতে সঞ্জীবের মৃত্যুর খবরে শোকস্তব্ধ পরিবার। উত্তরপ্রদেশে ট্রেনে কাটা পড়ে সঞ্জীবের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। যদিও এই ঘটনার পিছনে অন্য রহস্য রয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের।
ঠিক কী তথ্য পেয়েছে পুলিশ? পুলিশ সূত্রে খবর, উত্তরপ্রদেশের পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় স্টেশনের রেললাইনে থেকে উদ্ধার হয় সঞ্জীব বর্মণের ক্ষতবিক্ষত দেহ। পরিচয়পত্র দেখে সঞ্জীবকে চিহ্নিত করে পরিবার। দেহটি শনাক্ত হয়েছে ৩০ সেপ্টেম্বর। রেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হয়েছে। যদিও মৃত্যুর কারণ নিয়ে রহস্য রয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের।
ঠিক কী ঘটেছে দীনদয়াল উপাধ্যায় স্টেশনে? স্থানীয় সূত্রে খবর, আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা সঞ্জীব বর্মণ উত্তরপ্রদেশে কাজ করতেন। করোনাভাইরাসের জেরে গত দু’বছর বাড়ি আসতে পারেননি। এবার পুজোয় বাড়িতে ফিরে ছোট বোনকে মাস্টার্স ডিগ্রিতে ভর্তি এবং বাড়ির সকলকে জামাকাপড় কিনে দেবেন বলে ফোনে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সঞ্জীব। এমনকী স্থানীয় ক্লাবের পুজোতে ঢাকের খরচও দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। পঞ্চমীর মধ্যরাতে পুলিশের খবরে পুজোতে আর আনন্দ করা হল না সঞ্জীবের পরিবারের।
ঠিক কী অভিযোগ পরিবারের? সঞ্জীবের পরিবারের অভিযোগ, এক সহকর্মীর সঙ্গে ট্রেনে করে বাড়ি আসছিলেন সঞ্জীব। ২৭ তারিখ তাঁর বাড়ি ফেরার কথা ছিল। ট্রেন লেট হওয়ার কারণে ছেলের বাড়ি ফিরতে দেরি হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছিল। তার মধ্যে মোবাইলেরও সুইচ অফ। পরের দিন সঞ্জীবের খোঁজ না পেয়ে নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশনে জিআরপি অফিসে গিয়ে অভিযোগ করেন পরিবারের সদস্যরা। কর্মস্থলে এক সহকর্মীকে ফোন করে জানা যায়, সঞ্জীব এক সঙ্গীর সঙ্গে আলিপুরদুয়ারে ফিরছেন। সেই সঙ্গী যুবকের ফোন নম্বর ও ঠিকানা দেওয়া হয় পরিবারকে। সেখানে ফোন করে জানা যায়, ওই সঙ্গী সঠিক সময়ে বাড়ি ফিরেছেন। তাঁর কাছে সঞ্জীবের ব্যাগপত্র পাওয়া গিয়েছে। সঞ্জীবের ওই বন্ধু জানান, সঞ্জীবকে হঠাৎ মাঝপথে দেখতে পাননি তিনি। তারপর পঞ্চমীর রাতে সঞ্জীবের মৃত্যুর খবর আসে।