পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে তখন রোড–শো চলছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আর সেই সময় ঘটে তুমুল ঝড়বৃষ্টি। এই আবহে অভিষেক প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মঙ্গলকোটে জনসভায় যাওয়ার জন্য। কিন্তু প্রবল ঝড়ে আটকে পড়লেন। প্রকৃতির এই তাণ্ডবের মধ্যেই খবর পান ৭০ বছরের এক প্রবীণ ডায়ালিসিস রোগী পথে আটকে পড়েছেন। ছেলের মোটরবাইকে বাড়ি ফিরছিলেন। এই পরিস্থিতিতে পুলিশকে বলে দ্রুত সেই রোগীকে সেখান থেকে মঙ্গলকোটে তাঁর বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এমন দায়িত্ববোধ দেখে সবাই মুগ্ধ। দ্বিজপদ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে ওই ডায়ালাসিস রোগী ও তাঁর ছেলে এমন ঘটনায় অবাক। একজন সাংসদ তাঁদের জন্য এতটা করবেন তাঁরা ভাবতেই পারেননি।
কেমন করে বাড়ি পৌঁছে দিলেন? তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের কনভয়ে করেই অসুস্থ দ্বিজপদবাবুকে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। ঝড়বৃষ্টির তাণ্ডবে তখন কাঁপছিলেন দ্বিজপদবাবু। কারণ ডায়ালিসিস করেই তখন তিনি ফিরছিলেন। তিনি রেলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। বয়সের পাশাপাশি কিডনির সমস্যার ভুগছেন। তাঁর ডায়ালিসিস চলছে বর্ধমানের নার্সিংহোমে। সোমবার সেখান থেকেই ডায়ালিসিস করিয়ে ফেরার পথেই এই বিপত্তি ঘটে। বৃষ্টিতে ভিজে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন দ্বিজপদবাবু। সেখান থেকে নিরাপদে তাঁকে এত ভালভাবে পৌঁছে দেওয়ায় তিনি অভিষেককে আশীর্বাদ করেছেন।
আর কী জানা যাচ্ছে? একদিন আগেই রায়নায় ৯৭ বছরের বৃদ্ধ অভিষেকের কাছে বার্ধক্যভাতার আবেদন জানান। তৎক্ষণাৎ তাঁর সেই আবেদন গৃহীত হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাতা পৌঁছবে ওই বৃদ্ধের হাতে। কিন্তু তার আগে অভিষেকের নির্দেশে এককালীন সাহায্য হিসাবে ৫০ হাজার টাকা তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তার আগে ৬ দিনের মাথায় স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পাইয়ে দেন অভিষেক তেভাগা আন্দোলনে শহিদ পরিবারের সদস্যকে। ফলে জেলায় জেলায় মুশকিল আসান হয়ে উঠেছেন অভিষেক। এবার দুর্যোগেও ত্রাতার ভূমিকা পালন করলেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ।
ঠিক কী বলছেন বৃদ্ধের ছেলে? এই দুর্যোগ থেকে সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরতে পেরে তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আশীর্বাদ করেছেন। আর দ্বিজপদবাবুর ছেলের কথায়, ‘এই প্রবল ঝড়ের মধ্যে বিপদের সময়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পাশে না দাঁড়ালে হয়ত বাবা বেঁচে ফিরত না। ঝড়বৃষ্টির মধ্যে আটকে পড়ে বাবা ভীষণ কাঁপছিলেন। পুরো ভিজে গিয়েছিলাম। যা পরিস্থিতি হয়েছিল, বাবাকে বাড়ি নিয়ে আসা সম্ভব ছিল না। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি জানার পর আমাকে ও বাবাকে তাঁর কনভয়ে করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।’ তারপর মানকড় বাজারে একটি চায়ের দোকানে ঢুকে স্থানীয়দের সঙ্গে ঘরোয়া আড্ডায় বসে চা আর ঠোঙায় করে চপ ভাগ করে খেতে দেখা যায় অভিষেককে।