২০১৮ সালের ভুলের মাশুল গুনতে হয়েছিল ২০১৯ সালে। ২০২৪ সালেও যাতে সেরকম কোনও ‘শাস্তি’ পেতে না হয়, তা নিয়ে আগেভাগেই দলের নেতাদের সতর্ক করে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, কোনওভাবেই পাঁচ বছর আগের 'ভুল' করা যাবে না। সেইসঙ্গে গোষ্ঠীকোন্দলে লাগাম টানতে অভিষেক জানিয়ে দেন, নামেই পঞ্চায়েত ভোট হতে চলেছে। কিন্তু বিধানসভা এবং লোকসভা ভোটের ধাঁচে প্রার্থী বাছাই করা হবে।
সোমবার পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে তৃণমূলের জেলাস্তরের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন অভিষেক। তৃণমূল সূত্রে খবর, তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির সামনে অভিষেক স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে পঞ্চায়েত ভোটে কোনওরকম জোরজুলুম, হিংসা বরদাস্ত করা হবে না। পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যে শান্তি বজায় রাখতে হবে। গতবার বিরোধী প্রার্থী দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি বলে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যে ভুরিভুরি অভিযোগ উঠেছিল, এবার সেরকম যাতে না হয়, সেজন্য সতর্ক করে দিয়েছেন অভিষেক। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, লড়াইটা ময়দানে হবে। ময়দানে হারাতে হবে বিরোধীদের। কিন্তু বিরোধীদের ময়দানে না নামতে দেওয়ার যেন অভিযোগ না ওঠে।
আরও পড়ুন: কবে ঘোষণা হবে পঞ্চায়েত ভোট, আগাম জানিয়ে দিলেন শুভেন্দু
সেখানেই থামেননি অভিষেক। তৃণমূল সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটের আগে যে তৃণমূল নেতারা হুমকি-হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, তাঁদেরও সেন্সরের চেষ্টা করেছেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ। বিশেষত 'বিরোধীদের প্রার্থী দিতে দেওয়া হবে'গোছের মন্তব্য যাঁরা করেছিলেন,তাঁদের সতর্ক করেছেন। সেই প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গের দুই প্রথমসারির নেতার একেবারে নাম ধরেও সতর্ক করেছেন বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। যদিও উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের অন্যতম শীর্ষনেতা উদয়ন গুহের দাবি, অভিষেক বলেননি যে 'বিতর্কিত' মন্তব্য করা যাবে না।
কোন প্রেক্ষাপটে তৃণমূল নেতাদের সতর্ক করেছেন অভিষেক?
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে পশ্চিমবঙ্গে লাগামছাড়া হিংসার অভিযোগ উঠেছিল। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৩৪ শতাংশ আসনে জিতে গিয়েছিল তৃণমূল। যা পরবর্তীতে তৃণমূলকে তুমুল অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছিল। বিরোধীরা অভিযোগ করেছিল, অসংখ্য আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেয়নি তৃণমূল। সেইসময় তৃণমূল অবশ্য পুরো বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছিল।
আরও পড়ুন: বিরোধী প্রার্থী যেন না দাঁড়ায়, দাঁড়ালে দায় প্রধানের, ভয়াবহ হুমকি উদয়নের
কিন্তু পরের বছর লোকসভা ভোটে সেই হিংসার ‘মাশুল’ গুনতে হয়েছিল তৃণমূলকে। ২০০৯ সালে বাম আমলে যেখানে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের আসন সংখ্যা ৩৪ ছিল, তা ২০১৯ সালে নিজেদের জমানায় আসন সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ২২-তে। সেখানে বিজেপির চমকপ্রদ উত্থান হয়। দুই থেকে বেড়ে ১৮ টি আসনে জেতে বিজেপি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, লোকসভা ভোটে এমনিতেই প্রেক্ষাপট আলাদা হয়। তাছাড়া ২০১৮ সালে যে নির্বাচনে হাসতে-হাসতে তৃণমূলের জেতার কথা ছিল, সেখানোও লাগামছাড়া হিংসার জেরে মানুষের মনে বিরূপ মনোভার তৈরি হয়েছিল। যা প্রভাব ফেলেছিল ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে।
(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)