বিক্ষোভ যে হবে তা সকাল থেকেই আঁচ ছিল। সেই বিক্ষোভের জেরে মতুয়া ঠাকুরবাড়ির মূল মন্দিরে প্রবেশ করতে পারলেন না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই পর্যন্ত তিনি পাশের ছোট মন্দিরে গিয়ে পুজো দেন। সেখানে পুুজো দিয়ে বড়মা বীণাপানি দেবীর ঘরে যান। পরে মন্দির চত্বরে দাঁড়িয়েই শান্তনুকে হুঁশিয়ারি দিয়ে অভিষেক জানান, এবার থেকে তিন মাস অন্তর তিনি ঠাকুরনগরে যাবেন।
অভিষেকের ঠাকুর বাড়িতে আসাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই উত্তেজনার পারদ চড়ছিল। অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের পক্ষ থেকে ঠাকুর বাড়ির নাট মন্দিরে বসে বিক্ষোভ দেখানো হয়। সকাল থেকেই মন্দির চত্বর পুলিশে ছয়লাপ হয়ে যায়। বাড়িতে হঠাৎ পুলিশ দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর।
তিনি পুলিশ কর্মীদের সরিয়ে দেন। পরে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,' কে অভিষেক ও বাংলার মন্ত্রী না কেন্দ্রের? এত সাজগোছ হচ্ছ, মন্ত্রী এলেও হয় না। প্রধানমন্ত্রী যখন এসেছিলেন তখনও হয়নি। ও কে? সাধারণ সংসাদ।' এর পর তিনি বলেন,'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না থাকলে সাংসদ হিসাবে অভিষেক কে? সূর্যের আলোয় চাঁদ যেমন আলোকিত হয়, ও তাই। ও যেমন সাংসদ আমি সাংসদ। ভোটের আগে ঠাকুর বাড়িতে কী আছে?'
বিকাল তিনটি নাগাদ ঠাকুর বাড়িতে প্রবেশ করেন অভিষেক। তার আগে থেকেই মূল মন্দিরের সামনে বসে বিক্ষোভ দেখান অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের কর্মীরা। তাঁরা তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশে কালো পতাকাও দেখান। অভিষেকের সঙ্গে ঠাকুর বাড়িতে যান, বিধায়ক তাপস রায়, মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মন্ত্রী সুজিত বসু, বিধায়ক নির্মল ঘোষ।
তাঁরা প্রথমে মূল মন্দিরে ঢুকতে গেলে সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর তাঁর নিরাপত্তা রক্ষীদের নিয়ে মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করেন। নিরাপত্তা রক্ষীরাই আর কাউকে মন্দিরের ঢুকতে দেয়নি। পুলিশ ব্যারিকেড করে অভিষেককে ছোট মন্দিরে ঢোকার ব্যবস্থা করে দেয়। সেখানে পুজো দিয়ে তিনি যান বড় মা বীনাপাণি দেবীর ঘরে। সেখানে তিনি খানিক ক্ষণ থাকেন।
ঠাকুরবাড়ি থেকে বেরিয়ে অভিষেক বলেন, ‘শান্তনু ঠাকুর কখনও মানুষের দাবি নিয়ে সরব হয়েছেন? ধর্ম ছেড়ে মানুষের স্বার্থে লড়াই করুন।’
এ ধরনের বিক্ষোভের তীব্র নিন্দা করেছেন প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যখন এসেছিলেন আমরা তাঁকে সম্মান জানিয়েছিলাম। অভিষেকের বেলায় এমন করা হল কেন?’ প্রসঙ্গত, এর আগে বেশ কয়েকবার, ঠাকুরবাড়িতে এসেছেন অভিষেক। এইপ্রথম তাঁকে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল।