উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষিকা শিক্ষার্থী ববিতা দত্তের আত্মহত্যার ঘটনায় গত দু সপ্তাহ ধরেই উত্তপ্ত ক্যাম্পাস। ছাত্রীর মৃত্যুর পর থেকেই ঘটনায় অভিযুক্ত অধ্যাপকের শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন পড়ুয়ারা। দফায় দফায় বিক্ষোভ চালিয়েছে বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপি। অবশেষে আন্দোলনের চাপে পড়ে অভিযুক্ত অধ্যাপক সিদ্ধার্থ শঙ্কর লাহাকে গ্রেফতার করল মাটিগাড়া থানার পুলিশ। বুধবার অসমের গোয়ালপাড়া জেলার বাগুয়ান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার ধৃতকে শিলিগুড়ি আদালতে পেশ করা হয়।
আরও পড়ুন: NBU-এর গবেষিকা ছাত্রীর মৃত্যুতে অধ্যাপকের শাস্তির দাবি, ধর্নায় বসল ABVP
গত ১৬ তারিখ মাটিগাড়া সংলগ্ন শিবমন্দির এলাকার একটি ভাড়া বাড়ি থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় ওই ছাত্রীর। এই ঘটনার পর উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে টানা বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করেন পড়ুয়ারা। পাশাপাশি মৃতের পরিবারের তরফে মাটিগাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়। পরবর্তীতে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত নেমে পুলিশ জানতে পারে অভিযুক্ত অসমের গোয়ালপাড়া জেলার বাগুয়ান এলাকায় রয়েছে। এরপরই মাটিগাড়া থানার পুলিশ অসমের বাগুয়ান পুলিশের সহযোগিতায় ঘটনার ১৩ দিন পরে অভিযুক্ত অধ্যাপককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
অভিযুক্ত অধ্যাপকের শাস্তির দাবিতে গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনির্দিষ্টকালের ধর্না কর্মসূচি শুরু করেছিল এবিভিপি। ববিতার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় অধ্যাপক তথা বিভাগীয় প্রধান সিদ্ধার্থশঙ্কর লাহার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তোলে এবিভিপি এবং মৃতার পরিবার। এবিভিপির অভিযোগ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিক বার গবেষিকার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন বিভাগীয় প্রধান। কিন্তু চলতি মাসে গবেষিকাকে তিনি জানান যে, বিয়ে করা সম্ভব নয়। তার পরেই রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয়েছে ববিতার। সেক্ষেত্রে ববিতাকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
আরও অভিযোগ, এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জড়িত এবং তারা টাকা নিয়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। গোটা ঘটনায় রাজ্যপালকেও অভিযোগ জানানো হয়। এই ঘটনায় অভিযুক্ত অধ্যাপকের কড়া শাস্তির দাবি জানান মৃতার পরিবার।
উল্লেখ্য, এর আগে গত সপ্তাহের সোমবার দুপুরে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ল-মোড়ে এবিভিপি গণস্বাক্ষর গ্রহণ করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে। অবশেষে অভিযুক্ত গ্রেফতার হওয়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তি পেলেন মৃতার পরিবার।