সাত সকালে সরকারি রেশন দোকানে গিয়ে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও বরাদ্দ রেশন পাচ্ছেন না অনেকেই। অধিকাংশকেই ফিরে আসতে হচ্ছে খালি হাতে। ডিজিটাল রেশন কার্ডের সঙ্গে আধারের সংযুক্তি পর থেকেই শুরু হয়েছে এই দুর্ভোগ। যাঁদের হাতে ডিজিটাল রেশন কার্ড এখনও পৌঁছয়নি, তাঁদের অবস্থা হয়েছে আরও শোচনীয়। অভিযোগ, অনেক জায়গাতেই বলা হচ্ছে আধার নম্বরের সঙ্গে লিঙ্ক না করালে মিলবে না রেশন। যা নিয়ে জোর রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে।
এই প্রেক্ষিতে এবার মুখ খুললেন রাজ্য খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ। মন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, আধার কার্ডের সঙ্গে রেশন কার্ডের সংযুক্তিকরণ না হলেও রেশন বন্ধ করার কোনও নির্দেশ জারি করা হয়নি রাজ্য সরকারের তরফে। মানুষকে রেশন দিতে বাধ্য সব ডিলার। তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রথমে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আধার নম্বরের সঙ্গে রেশন কার্ড সংযুক্তিকরণের কাজ শুরু হলেও বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি অফিস, আইসিডিএস কেন্দ্র, স্কুল, পঞ্চায়েত দফতরে করা হচ্ছে আধার লিঙ্কের এই কাজ। উল্লেখ্য, আধার-রেশন কার্ড লিঙ্ক না থাকায় রেশন ডিলাররা নাকি রেশন দিতে অস্বীকার করছেন। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এই নিয়ে গন্ডগোলের ঘটনাও সামনে এসেছে।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকারের 'এক দেশ, এক রেশন কার্ড' চালু করা নিয়ে বারবার সংঘাতে জড়িয়েছে রাজ্য সরকার। এনিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি ছিল, রাজ্যের খাদ্য সুরক্ষা যোজনা প্রকল্পে অনেক বেশি মানুষকে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আর সেই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। ফলে রাজ্য সরকারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে এতদিন এই প্রকল্প চালু করা সম্ভব হয়নি কেন্দ্রীয় সরকারের। শেষে, পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা মাথায় রেখে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সমস্ত রাজ্যে 'এক দেশ, এক রেশন কার্ড' চালু করতে হবে। শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গে চালু হয় 'এক দেশ, এক রেশন কার্ড'। ২৯ জুন এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল নবান্ন।