ডেউচা-পাঁচমির প্রস্তাবিত কয়লা খনি প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণকে নিয়ে কি জটিলতা মিটল? প্রশাসন দাবি অনেকটা মিটেছে। প্রস্তাবিত খনি প্রকল্পের কাজ চললেও স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে সে ভাবে বাধা আসছে না। তাদের দাবি, লাগাতার আলোচনাতেই মিলেছে সমাধান। মানুষ নিজে থেকে এগিয়ে এসে সরকারকে জমি দিচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে চাকরির নিয়োগপত্র পাচ্ছেন।
ডেউচা-পাঁচামি ও দেওয়ানগঞ্জ-হরিণশিঙা ‘কোল ব্লকে’ কোথায়, কত পরিমাণ কয়লা কী অবস্থায় আছে, তা জানাতে এলাকার ৭৯ টি এলাকায় ড্রিল বা বোর হোল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই কাজের দায়িত্বে রয়েছে ‘সেন্ট্রাল মাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ডিজাইন ইনস্টিটিউট’ (সিএমপিডিআই)'। খনি গড়ার দায়িত্বে থাকা পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম হয়ে সংস্থাটি এই কাজ করছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই দেওয়ানগঞ্জ-হরিণশিঙা এলাকায় ১৪টি এবং ডেউচা-পাঁচামি ব্লকে ৩৫টি ‘বোর হোল’ করা হয়েছে। ডেউচায় ১৭টি বোর হোল করার কাজ চলছে। এই কাজ চলাকালীন স্থানীয়দের থেকে কোনও বাধা আসেনি। ফলে, প্রশাসন মনে করছে আগামিদিনে খনির কাজ বাধাহীন ভাবে এগুবে।
যে বাধার মুখোমুখি হতে হয়েছে প্রশাসনকে
খনির কাজ করতে গিয়ে দু'টি বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে প্রশাসনকে। প্রথমত, এলাকাবাসীর একাংশের বিরোধিতা। দ্বিতীয়ত, প্রকৃত জমির মালিক, বর্গাদার, পট্টাদার ভূমিহীনদের চিহ্নিত করে করা। প্রশাসন সূত্রে খবর, দেওয়ানগঞ্জ-হরিণশিঙা অংশে প্রাথমিক ভাবে এই কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। এবার ডেইচা-পাঁচমির জমির রেকর্ড ঠিক করার কাজ চলছে। প্রথমাংশে ভূমিহীনদের পাট্টা হয়েছে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পের কাজ শুরু হতেই বিরোধিতা আসে গ্রামবাসীদের একাংশের থেকে। তৈরি হয় ‘বীরভূম জমি, জীবন, জীবিকা ও প্রকৃতি বাঁচাও মহাসভা’। কিন্তু প্রশাসনের অভিযোগ, গ্রামবাসীরদের একাংশ ও কিছু 'বহিরাগত ও স্বার্থান্বেষী' এই বিরোধিতার পিছনে রয়েছে। গ্রামবাসীদের আস্থা অর্জনের লাগাতার উদ্যোগ নিতে শুরু করে প্রশাসন। তাতেই কাজ হয়েছে বলে প্রশাসন মনে করছে। যদিও আন্দোলনকারীদের দাবি, কয়েকজন ইচ্ছুক জমিদাতা গ্রামবাসীকে দেখিয়ে অন্যদের প্রভাবিত করতে চাইছে রাজ্য সরকার। আন্দোলনকারীদের দাবি, তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত এলাকার ৫১৬জনকে চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ৫১৬জন গ্রুপ ডি পদে চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। বাকিরা নিয়োগ পেয়েছেন জুনিয়ার কনস্টেবল পদে।