মৌসুনী দ্বীপ মানেই এখন দু তিনটি বিষয় অনেকের মনে আসে। একটি হল ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত হওয়া দ্বীপ। অপরটি হল বর্তমানে এই মৌসুনীই আবার টুরিস্ট ডেস্টিনেশনও। বহু পর্যটক সপ্তাহ শেষে চলে আসেন এই মৌসুনী দ্বীপে। এবার সেই মৌসুনী দ্বীপেই উঠল ফুটবল ঝড়।
গোটা দ্বীপের বিভিন্ন অংশে এখনও রয়েছে ঝড়ের দাপটের নানা টুকরো ছবি। নানা সমস্যায় জর্জরিত গোটা দ্বীপ। আর সেই প্রত্যন্ত দ্বীপে এবার ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন। আর তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেই ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশ নিলেন ৩৩জন এমন প্লেয়ার যারা আদতে আফ্রিকার বাসিন্দা।সেই সুদূর আফ্রিকা থেকে ফুটবল খেলার জন্য তারা এসেছিলেন মৌসুনী দ্বীপে। বাংলার প্রত্যন্ত দ্বীপে এসেছিলেন তারা।
তাঁদের মধ্য়ে কেউ আইভরি কোস্ট থেকে, কেউ সেনেগাল, ঘানা, ক্যামেরুন কিংবা ঘানা থেকে এসেছিলেন মৌসুনী দ্বীপে। দেখা গিয়েছে যে টিমগুলি ওখানে খেলতে গিয়েছিল তার মধ্যে প্রতি চারজন প্লেয়ারের মধ্য়ে একজন হলেন আফ্রিকান প্লেয়ার। মূলত তারা খেপ খেলেন বিভিন্ন ক্লাবে।
সেই খেপ খেলার জন্য তারা এসেছিলেন এই ফুটবল টুর্নামেন্টে। রবিবারই এই টুর্নামেন্টের শেষ হল। পুরস্কার মূল্য ছিল ২ লাখ টাকা। ১৬টি টিমএই খেলায় অংশ নিয়েছিল। তাদের মধ্য়ে অনেক প্লেয়ার ছিলেন যারা এসেছিলেন আফ্রিকা থেকে।
এদিকে একটা সময় গ্রাম বাংলায় এই খেপ খেলার বিষয়টি অত্যন্ত প্রচলিত ছিল। টাকা বা খাবার সহ অন্যান্য কিছুর বিনিময়ে এক একজন প্লেয়ার নির্দিষ্ট টিমে ফুটবল খেলতে যেতেন। বর্তমানেও বহু জায়গায় এই ধরনের প্রবনতা রয়েছে। তবে বর্তমানে দল বেঁধে হই হই করে ফুটবল খেলার প্রবণতা আগের তুলনায় অনেকটাই কমে গিয়েছে। এখন বেশিরভাগ মানুষই মোবাইল মুখে বসে থাকতেই ভালোবাসেন।
বহু মাঠ এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। কেউ খেলে না সেই মাঠ গুলিতে। তবে কয়েক বছর আগেও পরিস্থিতি এমন ছিল না। সেই সময় বিকাল হলেই শুরু হয়ে যেত ফুটবল খেলা। সেই ছবিই ফিরে এলে মৌসুনী দ্বীপে।
ঝড়ে বিধ্বস্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই দ্বীপ। যোগাযোগের মাধ্যম বলতে নৌকা। সেই নৌকা চেপেই মূল ভূখন্ডের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হয়। একেবারে বিচ্ছিন্ন একটা দ্বীপ। বার বার ঝড় আসে। বিধ্বস্ত হয় দ্বীপ। দ্বীপের বহু এলাকায় চলে আসে লবনাক্ত জল। নষ্ট হয় চাষের জমি। বুসবুল, আমফান, ইয়াস কার্যত লন্ডভন্ড করে দিয়েছিল এই দ্বীপেই । সেই দ্বীপেই খুশির জোয়ার আনল ফুটবল।