‘দুয়ারে সরকার’–এর পর এবার ‘পাড়ায় পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচি শুরু হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। বীরভূম জেলার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে সোমবার এই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ব্যাপারে তিনি জানান, পাড়ায় হয়তো একটা ছোট কালভার্টের প্রয়োজন বা রাস্তায় সমস্যা— এ ধরণের ছোট ছোট কাজ পাড়ায় বসেই সমাধান করা যাবে এই কর্মসূচিতে।
মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘দুয়ারে সরকার’–এর পাশাপাশি চলবে নতুন কর্মসূচি ‘পাড়ায় পাড়ায় সমাধান’। এলাকাভিত্তিক পরিকাঠামোগত ও পরিষেবাগত বিভিন্ন ছোট ছোট সমস্যায় সমাধান হবে ‘পাড়ায় পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচিতে। এই কর্মসূচি চলবে ২ জানুয়ারি থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত। তাঁর কথায়, ‘হাসপাতাল আছে, অ্যাম্বল্যান্স নেই, পাইপলাইন পৌঁছেছে কিন্তু কোনও কারণে জল আসছে না বা স্কুলে আর একটি শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন— এমন কিছু সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবে এই কর্মসূচিতে।’
এদিন ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির সাফল্য নিয়ে বিভিন্ন পরিসংখ্যান তুলে ধরেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে গ্রাম ও শহর মিলিয়ে মোট ৬০৯টি শিবিরে ৫ লক্ষ মানুষ গিয়েছেন। ৩ লক্ষের বেশি মানুষ কিছু না কিছু পরিষেবা চেয়ে আবেদনপত্র দিয়েছেন। তার মধ্যে ১ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষ তাঁদের কাঙ্খিত পরিষেবা পেয়ে গিয়েছেন। ইতিমধ্যে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প চেয়ে ৮৭ হাজার ৯১৯টি আবেদন গৃহীত হয়েছে। তার মধ্যে ২৮ হাজার ২৩৬টি পরিবার ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড পেয়েছে।’
একইসঙ্গে এদিন বীরভূম জেলার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙায় গার্মেন্টস হাব ‘সাজবিতান’–এর পাশাপাশি বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো উদ্বোধন করেন তিনি। একইসঙ্গে বীরভূম জেলায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার সাতটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সভা থেকে সরাসরি নদিয়ার তেহট্টে হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ক্রীড়াঙ্গনের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন তিনি।
এদিন চার জেলায় চারটি খাদ্যভবনের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সিউড়িতে খাদ্যভবনের উদ্বোধনে ছিলেন মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে খাদ্যভবনের উদ্বোধনে ছিলেন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়িতে খাদ্যভবনের উদ্বোধনে ছিলেন মন্ত্রী গৌতম দেব ও কৃষ্ণনগরে খাদ্যভবনের উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন নদিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুণ্ডু, জেলাশাসক ও অন্যরা।
এর পাশাপাশি এদিন বীরভূমের বাসিন্দা শহিদ জওয়ান রাজেশ ওরাংয়ের বোন শকুন্তলা ওরাংকে সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বীরভূমের সন্তান শহিদ সেনা জওয়ান রাজেশের পরিবারকে এর আগে ৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য করেছিল প্রশাসন। এদিন সে কথাও জানান মুখ্যমন্ত্রী।