ভুয়ো আইএএস কাণ্ডের পর শহর থেকে জেলায়, একে একে পর্দাফাঁস হচ্ছে নকল অফিসারদের। কেউ ভুয়ো মুখ্যসচিব সেজে নীল বাতির গাড়ি নিয়ে ঘুরেছেন, কেউ বা পুলিশ অফিসার সেজে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণা করেছেন। এবার পুলিশের হাতে ধরা পড়ল ভুয়ো সিবিআই অফিসার।
অভিযোগ, নাম বদলে নিজেকে ভুয়ো সিবিআই অফিসার পরিচয়ে এক তরুণীকে বিয়ে করেছিলেন ওই অভিযুক্ত। স্ত্রী’র অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে অর্ণব মজুমদার নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয় পুরাতন ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায়ের। ওই তরুণীকে সিবিআই অফিসার বলে নিজের পরিচয় দেয় অর্ণব। এর পর দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক গাঢ় হয়। চলতি বছর ১৪ মার্চ দুই পরিবারের মতে রেজিস্ট্রি করে অর্ণবের সঙ্গে বিয়ে হয় তনুশ্রীর। বিয়ের পর তনুশ্রীকে রাজারহাটের একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে আসে অর্ণব। সেখানেই নববিবাহিত দম্পতি সংসার শুরু করেন।
কিন্তু তনুশ্রীর দাবি, এরপরেই তাঁর উপরে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাতে শুরু করে অর্ণব। সম্প্রতি সে তনুশ্রীকে জানায় যে, দফতর থেকে তাকে মায়ানমারে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। স্বামীর এই আচরণে সন্দেহ হয় তনুশ্রীর। এরইমধ্যে সুযোগ পেয়ে ঝাড়গ্রামে বাপের বাড়ি পালিয়ে যান ওই নববধূ। সেখানে পৌঁছে ১৮ জুন ঝাড়গ্রাম থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।
বধূর অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ। তদন্তে নেমে চক্ষু চড়কগাছ তদন্তকারী আধিকারিকদের। পুলিশ আধিকারিকরা জানতে পারেন অর্ণব মজুমদার বলে পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির আসল নাম অনির্বাণ কাঞ্জিলাল। আদতে কলকাতার জোড়াবাগান থানা এলাকার বাসিন্দা সে।
ইতিমধ্যেই কসবা থানায় তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। সেকারণে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দিও ছিল অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি। তদন্তকারীরা ওই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আদালতে ট্রানজিট রিমান্ডের আবেদন জানান। তা মঞ্জুর হওয়ার পর ধৃতকে ঝাড়গ্রাম আদালতে নিয়ে আসা হয়। ধৃতের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও বধূ নির্যাতনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার শুনানির পর ঝাড়গ্রাম আদালতের বিচারক ঋষি কুশারী অভিযুক্তকে দু’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।