দিদির দূত হয়ে গ্রামে গেলেই একের পর এক বিক্ষোভের মুখে পড়ছেন শাসকদলের নেতারা। তালিকা ক্রমশ বাড়ছে। একের পর এক জনপ্রতিনিধি বাধার মুখে পড়ছেন। এবার রাজগঞ্জের বিধায়ক তথা জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায়ের সামনে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জলপাইগুড়ি জেলা মহিলা তৃণমূলের নেত্রী নুরসাত জাহানকে ঘিরেও বাসিন্দারা এদিন তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ডাবগ্রাম ২ অঞ্চলের অন্তর্গত জাবরাভিটা এলাকায় গিয়েছিলেন দিদির দূতেরা। সাধারণ মানুষের সঙ্গে তাঁরা কথা বলতে যান। আর সেখানেই তাঁরা রীতিমতো ক্ষোভের মুখে পড়েন। স্থানীয় এক যুবক বিধায়ক খগেশ্বর রায়কে বলেন, আমরাই তো আপনাকে জেতালাম। খাটাখাটনি করলাম। আর এখন দেখি আমাদেরই কোনও দাম নেই। আমাদের সমস্যাটা মেটান। এদিকে যুবকের মুখে এই কথা শুনে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে যান তিনি। দ্রুত তিনি ওই এলাকা থেকে চলে যান।
এরপর স্থানীয় মহিলারাও চেপে ধরেন তাঁকে। তাঁরা বলেন,আমরা পানীয় জল পাচ্ছি না। বার বার আপনাদের জলের জন্য বলেছি। কিন্তু জল পাচ্ছি না। কতদিন এটা চলবে। এদিকে বিক্ষোভ ক্রমে বাড়ছে এটা আঁচ করে বিধায়ক দ্রুত হাত জোড় করে আশ্বাস দিয়ে এলাকা ছাড়েন।
এদিন একাধিক এলাকায় গিয়ে এভাবেই ক্ষোভের মুখে পড়েন বিধায়ক। দৃশ্যতই অস্বস্তিতে পড়েন তিনি। ওই মহিলা বলেন, পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। আমরা খুব সমস্যা পড়েছি। ইলেকট্রিকেরও নানা সমস্যা রয়েছে।
বিধায়ক বলেন. দূত হিসাবে যেটা দেখলাম কিছু অভাব অভিযোগ রয়েছে। আমাকে লিখিত আকারে দাবি করলে আমি বিষয়টি দেখব। নিজের দলের একাংশের ক্ষোভ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাত ভাই থাকলে ক্ষোভ হয়। দলের মধ্যে ক্ষোভ হতেই পারে। স্বামী স্ত্রীর ঝগড়া হয়। ভাইয়ে ভাইয়ে ঝগড়া হয়। তেমনি হচ্ছে। পানীয় জলের ব্য়বস্থা করা হবে। ২০২৪ সালের আগে বাংলার প্রতিটা বাড়িতে বাড়িতে পানীয় জল মিলবে।
এদিকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, পঞ্চায়েত ভোটের আগে কার্যত গ্রামে গ্রামে জল মাপতে নেমেছেন তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা। কোথায় ক্ষোভ বিক্ষোভ রয়েছে সেটাও আঁচ করতে পারছেন না। তবে আখেরে এতে দলেরই দীর্ঘকালীন ক্ষেত্রে সুবিধা হচ্ছে। ড্যামেজ কন্ট্রোলের ক্ষেত্রে দল অনেকটাই সময় পেয়ে যাবে। অন্যদিকে দলের কোন অংশটি তলায় তলায় সমস্যা তৈরি করতে পারে সেটাও জেনে যাচ্ছেন নেতারা। সেই অনুসারেই পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারে দল।