সম্প্রতি নিম্নচাপ, দানার প্রভাবে ভারী বর্ষণের ফলে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়। তার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিস্তীর্ণ অঞ্চলের কৃষি জমি। এই অবস্থায় আর্থিক ক্ষতি হওয়ায় চরম সমস্যায় পড়েছেন চাষিরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছিলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের শস্য বীমা দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই তার জন্য আবেদন গ্রহণ চলছে। এই অবস্থায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া একজন কৃষকও যেন শস্য বীমার সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয় সে বিষয়ে নজর দেওয়ার নির্দেশ দিলেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এর পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরির উপরেও জোর দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘দানা’র জেরে রাজ্যের ৯ জেলায় ১ লক্ষ হেক্টর জমির ফসলে ক্ষতি, কালীপুজোর আগে কৃষকদের উদ্বেগ বাড়ছে
গতকাল বিকেলে হাওড়ার উলুবেরিয়া ১ নম্বর বিডিও অফিসে আধিকারিকদের নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন কৃষিমন্ত্রী। সেখানে বাংলা শস্য বীমা প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে মন্ত্রী এমন নির্দেশ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, শুধু মাত্র দানার প্রভাবেই রাজ্যের ৯ জেলায় বৃষ্টিতে ১ লক্ষ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। কৃষি দফতরের সমীক্ষা বলছে, শুধুমাত্র পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতেই ২০ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। সেখানে ২০ হাজার হেক্টর কৃষিজমি জলমগ্ন হয়েছিল। তার মধ্যে ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছিল আমন ধান।
অন্যদিকে, ৩০০০ হেক্টর জমিতে পানচাষ, ফুল,সবজি চাষও বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।প্রথমে রাজ্যের তরফে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের শস্যবিমার আবেদনের শেষ সময় ছিল ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। সেই মেয়াদ আরও একমাস বাড়িয়ে ৩১ নভেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। তখনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ বার্তা দিয়েছিলেন যাতে ক্ষতিপূরণ পাওয়া থেকে কৃষকরা বঞ্চিত না হন। এদিন সেই কথায় শোনা গেল কৃষিমন্ত্রীর মুখে।
তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে শিবির করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আবেদনপত্র জমা নেওয়া হচ্ছে। শুধুমাত্র হাওড়া জেলায় ১ লক্ষ ২১ হাজারের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আবেদন করেছেন। অন্যান্য জেলাতেও এই কাজের অগ্রগতি ভালো হচ্ছে। মন্ত্রী জানান, আগামী দিনে সব জেলাতেই তিনি যাবেন। এদিনের বৈঠকে মন্ত্রী সকলের মধ্যে সমন্বয় সাধনের ওপরও জোর দিয়েছেন। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পূর্ত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী পুলক রায়, কৃষি দফতরের প্রধান সচিব ওঙ্কার সিং মীনা, জেলাশাসক পি দীপাপপ্রিয়া প্রমুখ।