বাতাসের মান থেকে শুরু করে দূষণের তথ্য এখন নিয়মিত খোঁজ রাখার একটা ট্রেন্ড আছে। কারণ বাতাসের মান খারাপ হলে বা বাতাসে দূষণের পরিমাণ বেশি থাকলে তা স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। আর এই প্রক্রিয়ায় দেখা গেল, বাতাসের মানের নিরিখে দেশের প্রধান শহরগুলির তালিকায় ১৫ ধাপ উঠে এসেছে আসানসোল। ২০তম স্থানে রয়েছে শিল্পশহর আসানসোল। কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বায়ু এবং জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক দেশের মধ্যে পরিশুদ্ধ বায়ুর নিরিখে যে শহরগুলির তালিকা তৈরি করেছে তাতে কলকাতা, হাওড়াকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গেল শিল্পশহর আসানসোল। ১০ লাখের বেশি জনসংখ্যার নিরিখে ঝাড়াই–বাছাই করা হয়েছিল ৪৭টি শহরকে। আর তাতেই উঠে এসেছে আসানসোলের নাম।
আসানসোল শিল্পশহর হওয়ায় কলকারখানার দূষণ বাতাসে মেশে। তা থেকেই বাতাসের মান খারাপ হয়। বায়ু দূষণের মতো ঘটনা ঘটে। এই বায়ু দূষণ একদা আসানসোলে বেশ উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছিল। তার কারণ ছিল, নিয়মবিধি কিছুই না মেনে একাধিক কলকারখানার উৎপাদন। ২০২৩ সালে দেশের দূষিত শহরগুলির মধ্যে আসানসোল ছিল ৩৫ নম্বরে। সেখানে এখন এসেছে ২০তম স্থানে। এখন এই উন্নতির কারণ খুঁজছে সকলে। আর এই বিষয়ে আসানসোল পুরসভার চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘এখানে বাতাসের গুণমান উন্নত করতে জল কামান ব্যবহার করা হয়েছে। দূষিত এলাকা চিহ্নিত করতে ওড়ানো হয়েছে ড্রোন। রাস্তা পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। আর আবর্জনা সরানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ‘ইহা পে আরজি কর হো জায়েগা’, বেসরকারি হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসককে হুমকি
এই বাতাসের মান এবং পরিবেশ দূষণ নিয়ে সমীক্ষা করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, পরিশুদ্ধ বায়ুর শহরের তালিকার শীর্ষে রয়েছে সুরাট। তার পরেই আছে জবলপুর, আগ্রা, লখনৌ শহর। ২০২৩ সালে কলকাতা ছিল ৩৩ তম স্থানে। সেখানে এবার শহর কলকাতা পিছিয়ে গিয়েছে ৪১ তম স্থানে। আর হাওড়া পৌঁছেছে ৪৪ তম স্থানে। ২০২৩ সালে হাওড়া ছিল ৪৩ নম্বরে। এই বিষয়ে আসানসোল পুরসভার মেয়র বিধান উপাধ্যায় জানান, পরিশুদ্ধ বাতাস নিয়ে দ্বিতীয়বার এমন র্যাঙ্কিং প্রকাশিত হল। যে শহরগুলির জনসংখ্যা ৩ লক্ষের কম তাদের মধ্যে উন্নতি করেছে হলদিয়া। সপ্তম থেকে উঠে এসেছে পঞ্চম স্থানে। তবে সবার উপরে রয়েছে রায়বরেলি।
আসানসোলের এই উন্নতি বেশ চোখে পড়ার মতো। কারণ শিল্পশহর হয়ে বাতসের মান ঠিক রাখা খুব চ্যালেঞ্জের। আর সেটাই করতে পেরেছে আসানসোল। বায়ুদূষণের নানা প্যারামিটারের ভিত্তিতে আসানসোল ২০২২ সালে ৯৫ পয়েন্ট পেয়েছিল। ২০২৩ সালে শহরের প্রাপ্ত নম্বর ছিল ১৩৫.৭। সেখানে ২০২৪ সালে আসানসোলের প্রাপ্ত নম্বর ১৬৯.৫। এই তালিকায় ধানবাদ ১৯ তম স্থান থেকে নেমে গিয়ে ৩৮ তম স্থানে পৌঁছেছে। ৩ থেকে ১০ লক্ষ মানুষের বাস রয়েছে এমন শহরের ক্ষেত্রে বেশ পিছিয়ে পড়েছে দুর্গাপুর। ২০২৩ সালে দ্বিতীয় ক্যাটেগরির ৪৪টি শহরের মধ্যে দুর্গাপুরের অবস্থান ছিল ১৬। ২০২৩ সালে দুর্গাপুর পেয়েছিল ১৬১.৭ নম্বর। এ বার সেখানে দুর্গাপুর পেয়েছে মাত্র ১৪১.৪ নম্বর।