কোনও চমকের পথে হাঁটলেন না বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রত্যাশা মতোই রাজ্যের মুখ্যসচিব হলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে নয়া স্বরাষ্ট্রসচিব হলেন হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। আগামী ১ অক্টোবর থেকে তাঁরা দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন।
চলতি মাসের শেষদিনে মুখ্যসচিব পদ থেকে অবসর গ্রহণ করবেন রাজীব সিনহা। প্রথামাফিক ইতিমধ্যে মন্ত্রিসভার শেষ বৈঠকে তাঁকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস, আমফানের মতো বিভিন্ন জটিল পরিস্থিতি সামলানোর জন্য তাঁর প্রশংসা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও জানিয়েছিলেন, অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কাজ সামলেছেন রাজীব।
তাঁর পরে কে রাজ্যের মুখ্যসচিব হবেন, তা নিয়ে প্রশাসনিক মহলে জল্পনা চলছিল। তবে এগিয়ে ছিলেন বর্তমান স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন। রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিবদের সবথেকে সিনিয়র ১৯৮৭ ব্যাচের এই আইএএস অফিসার। দীর্ঘ প্রশাসনিক জীবনে একাধিকবার বিভিন্ন সমস্যা থেকে সরকারকে যেভাবে বের করে এনেছেন, সেজন্য তাঁর দিকেই পাল্লা ভারী ছিল। আগে পরিবহন, শিল্পের মতো দফতর সামলানোর পাশাপাশি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি।
সেই প্রত্যাশামতোই আলাপনের উপরই আস্থা রেখেছেন মমতা। সোমবার নবান্নের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারির পাশাপাশি টুইটারেও নয়া মুখ্যসচিবের নাম জানান তিনি। বলেন, ‘আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে এখন অতিরিক্ত মুখ্যসচিবকে (স্বরাষ্ট্র এবং তথ্য ও সংস্কৃতি) নয়া মুখ্যসচিব হিসেবে নিযুক্ত করা হল।’
নয়া স্বরাষ্ট্রসচিব কে হবেন, তা নিয়েও আমলা মহলে গুঞ্জন চলছিল। দৌড়ে ছিলেন কৃষিসচিব সুনীল গুপ্ত, অর্থসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতরের সচিব মনোজ পন্থের নামও উঠে আসছিল। বিশেষত গত বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্যকে সরিয়ে দেওয়ায় রাজ্য সরকার বাড়তি সতর্ক থাকবে বলে প্রশাসনিক মহলের অনুমান ছিল। তাই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দায়িত্ব সামলানো সুনীল গুপ্তকে মুখ্যসচিবের পদে বসানো হতে পারে জল্পনা ছড়িয়েছিল।
শেষপর্যন্ত অবশ্য হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে স্বরাষ্ট্রসচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যিনি ১৯৮৮ ব্যাচের আইএএস অফিসার। তাঁর ছেড়ে যাওয়া অর্থ দফতরের দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন ১৯৯১ ব্যাচের আইএএস অফিসার মনোজ পন্থ। তাঁরা প্রত্যেকেই ১ অক্টোবর থেকে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন। সেজন্য তাঁদের শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
অন্যদিকে, বিদায়ী মুখ্যসচিবকে পশ্চিমবঙ্গ শিল্প উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ১ অক্টোবর থেকে পরবর্তী তিন বছর তিনি সেই দায়িত্ব সামলাবেন। সে কথা ঘোষণা করে মমতা, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জন্য নিরলস পরিশ্রমের জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’