সে আবাসিক ছাত্রী। সরকারি হস্টেলে থেকে পড়াশোনা করে। কদিন ধরে পেটে ব্যথা করছিল। এবার সেই ব্যথাই প্রবল আকার নিল। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ওই আবাসিক ছাত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। সরকারি হস্টেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় পড়ে যায়। হাসপাতালে যখন ভর্তি করা হয়েছিল তখন মনে করা হচ্ছিল কিশোরী অ্যাপেনডিক্সের যন্ত্রণায় ভুগছে। কিন্তু তাকে দেখে সন্দেহ হয় চিকিৎসকদের। তাই ১৬ বছরের কিশোরীকে লেবার রুমে পাঠানো হয়। আজ সকাল ৮টা নাগাদ ওই কিশোরী পুত্রসন্তানের জন্ম দেয় বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।
আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটায় এই সরকারি হস্টেল রয়েছে। যেখানে থেকে ওই কিশোরী পড়াশোনা করত। কিন্তু তার অন্তঃসত্ত্বা হওয়া এবং নাবালিকা অবস্থায় সন্তান প্রসব করার ঘটনায় জেলাজুড়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। কেমন করে এটা সম্ভব? তা জানতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফালাকাটা থানায় গোটা বিষয়টি জানিয়েছে। তখনই এই বিষয়টি চাউর হয়ে যায়। আর পকসো ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এমনকী এই ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জেলা শিশু সুরক্ষা কমিশনের কর্তারাও।
আরও পড়ুন: চিন্ময়কৃষ্ণ দাস কাণ্ডে আসামি হওয়া ৬৩ আইনজীবীর জামিন, বিক্ষোভ আদালত চত্বরে
এদিকে হস্টেল সূত্রে খবর, এই কিশোরী আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রাম ব্লকের বাসিন্দা। আর এই ছাত্রী প্রায়ই ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে যেত। এবার অনেকদিন ছুটি কাটিয়ে গত ৮ জানুয়ারি হস্টেলে ফেরে সে। কিন্তু এই ঘটনা সবার নজর এড়িয়ে গেল কেমন করে? উঠছে প্রশ্ন। এই বিষয়ে হস্টেল সুপার বলেন, ‘কোনও বেবি বাম্প কিন্তু লক্ষ্য করা যায়নি। শীতকালে ভারী পোশাকের জেরে বিষয়টি নজর এড়িয়ে যেতে পারে।’ কিন্তু ফালাকাটার বিডিও অনীক রায়ের বক্তব্য, ‘গাফিলতি তো কিছু হয়েছে। গোটা বিষয়টি আমি জেলাশাসক–সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হবে।’
অন্যদিকে এই কিশোরীর গতিবিধি নিয়ে নানা তথ্য সামনে আসতে শুরু করেছে। এই কিশোরীর সঙ্গে প্রতিবেশী এক যুবকের প্রণয় ছিল। তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জেরেই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এখন তার প্রেমিককেও চিহ্নিত করা হয়েছে। এই জেলার পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশীর কথায়, ‘প্রতিবেশী এক যুবকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় কিশোরীর। তার জেরেই ওই অনভিপ্রেত ঘটনাটি ঘটেছে। সরকারি হস্টেলে শারীরিক সম্পর্কের কোনও ঘটনা ঘটেনি।’ আর কিশোরীর বাবা বলেছেন, ‘একটি ছেলের সঙ্গে আমার মেয়ের সম্পর্ক আছে। কিন্তু এত কিছু আমি জানি না। আমার স্ত্রী একসঙ্গে না থাকায় মেয়ে যে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে সেটা টের পাইনি।’