গজরাজের মুখোমুখি পড়ে প্রাণ যাবে এমনটা ভাবেননি কেউ। তাই অভাবের সংসার চালাতে কাঠ সংগ্রহ করতে জঙ্গল এলাকায় গিয়েছিলেন তিনজন মহিলা। কিন্তু সেই কাজ করতে গিয়ে বিপদের মুখে পড়তে হল তাঁদের। শুধু তাই নয়, কাঠ কুড়োতে গিয়ে পড়তে হল গজরাজদের মুখে। আর সেইসব হাতির হামলায় প্রাণ গেল ওই তিনজন মহিলার। এমনকী হাতির হামলায় জখম হয়েছেন একজন। তবে তিনি প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন। যদিও এখনও মৃত্যু মুখ থেকে ফেরা ওই মহিলার ঘোর কাটেনি। ট্রমার মধ্যে রয়েছেন। আজ, বৃহস্পতিবার বিকেলে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের চিলাপাতা রেঞ্জ এলাকায়।
হাতির হামলায় যে তিনজন মারা গিয়েছেন তাঁরা হলেন— রেখা বর্মন, চাঁদমণি ওঁরাও এবং সুখমণি লোহার। নিহত ওই মহিলারা প্রত্যেকেই দক্ষিণ মেন্দাবাড়ির বাসিন্দা। মোট চারজন মহিলা আজ, বৃহস্পতিবার দল বেঁধে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের চিলাপাতা রেঞ্জে কাঠ কুড়োতে গিয়েছিলেন। তখনই হঠাৎ হাতির মুখোমুখি হয়ে ঘাবড়ে যান। আর তখনই হাতির হামলার শিকার হন তাঁরা। সেখান থেকে পালাবার আগেই হাতি ছিন্নভিন্ন করে দেয় ওই তিনজন মহিলার শরীর। তার জেরে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনজন মহিলা।
আরও পড়ুন: জেলের মধ্যেই অনশন শুরু করলেন মাওবাদী নেতা, অর্ণব দামের নয়া দাবি ঠিক কী?
বাংলায় এখন হাতির সংখ্যা বেড়ে ৮০০ হয়েছে। তাই লোকালয়ে বেরিয়ে আসছে। এই নিয়ে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে রাজ্যকে চিঠিও দেওয়া হয়। হাতির সমস্যা যে বাড়ছে তা নিয়ে বিধানসভায় বক্তব্য রাখেন বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। আর এটা নিয়ে যে রাজ্য সরকার উদ্বিগ্ন তাও জানিয়ে ছিলেন তিনি। এবার ঘটে গেল মর্মান্তিক ঘটনা। তিনজন মহিলা একসঙ্গে মারা গেলেন হাতির হানায়। আর একজন মহিলা কোনওরকমে প্রাণে বাঁচেন। আহত মহিলা নিমা চাড়োয়া দক্ষিণ মেন্দাবাড়ির বাসিন্দা। প্রাণে বাঁচলেও আঘাত মারাত্মক বলে খবর। তিনি শরীরের নানা জায়গায় আঘাত পেয়েছেন। জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত মহিলা। এখন জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের চিলাপাতা রেঞ্জ এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
এই ঘটনা নিয়ে গোটা গ্রামে আতঙ্কের বাতাবরণ ছড়িয়ে পড়েছে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল যেখানে রয়েছে ঠিক তার পাশেই এখন নতুন বিপদ দেখা দিল। কারণ উত্তর ঢালকর গ্রামে এখন বুনো শুয়োরের হামলা শুরু হয়েছে। তার জেরে আতঙ্কের প্রহর গুনছেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। বুনো শুয়োর ঘরে ঢুকে হামলা চালাচ্ছে বলেই খবর মিলেছে। বুনো শুয়োরের হামলায় এখনও পর্যন্ত জখম অন্তত পাঁচজন। শুয়োরের কামড়ে আহত হয়েছে দুটি গরুও। এই খবর পেয়ে অকুস্থলে পৌঁছন বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের কর্মীরা। এখন শুয়োর ধরতে ঘটনাস্থলে গিয়েছেন বন দফতরের কর্মীরা। তবে এখনও বুনো শুয়োরকে কাবু করা যায়নি বলেই সূত্রের খবর।