কিছুদিন ধরে বাংলাদেশ থেকে বাংলায় জঙ্গিরা ঢুকে পড়ছে। অসম, ত্রিপুরা, বিহারেও সেই জঙ্গিদের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। তাদের ধরে জেলে পোরা হচ্ছে। আনসারুল্লা বাংলা টিমের জঙ্গিরা অন্যান্য গা–ঢাকা দিলেও মূলত নাশকতা করতে চাইছে বাংলায় বলে অভিযোগ। এবার আনসারুল্লা বাংলা টিমের জঙ্গিদের নিশানায় পড়ল পাওয়ার গ্রিড। এই খবর পাওয়ার পরই সেখানের নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করা হয়েছে। নাশকতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর তাই জেলার সব বিদ্যুৎ সাবস্টেশনে সতর্কতা জারি করেছে আলিপুরদুয়ার জেলা বিদ্যুৎ দফতর। এই জেলায় বিদ্যুৎ দফতরের মোট ১৬টি সাবস্টেশন রয়েছে। আর সেখানেই আঘাত হানতে চাইছে জঙ্গিরা। এই খবর আগাম মিলেছে।
এই খবর পাওয়ার পরই সবকটি সাবস্টেশনেই বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্রত্যেক সাবস্টেশনের গেটে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনকী ২৪ ঘণ্টা বন্ধ করে রাখার নির্দেশ পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। এই সাবস্টেশনের ভিতরে কেউ প্রবেশ করতে চাইলে তাঁদের পরিচয়পত্র দেখে সম্পূর্ণ যাচাই করার পরই অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। কেন এমন বাড়তি সতর্কতা? জেলা বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে খবর, আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়ায় বিদ্যুৎ দফতরের ২২০ কেবি সাবস্টেশনে এনআইএ’র একটি দল আসে। তারা এসেই এই নাশকতার আশঙ্কার কথা জানিয়ে গিয়েছে। তাদের কাছে গোপন খবর আছে। আর এই কথা শোনার পরই জেলার সাবস্টেশনে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে জেলা বিদ্যুৎ দফতর।
আরও পড়ুন: বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল মালদার কালিয়াগঞ্জ, বোমা ফেটে তুলকালাম কাণ্ড, জখম ২ শিশু
বাংলাদেশে এখন উত্তপ্ত পরিবেশ তৈরি হয়ে আছে। হিন্দুদের উপর সেখানে আক্রমণ বেড়েই চলেছে বলে অভিযোগ। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক তলানির দিকে যাচ্ছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের। আর ওপার বাংলায় মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর থেকে এই জঙ্গিরা জেল থেকে মুক্তি পেয়েছে। আনসারুল্লা বাংলা টিমের একাধিক জঙ্গি অসম ও বাংলায় গ্রেফতারও হয়েছে। তাদের জেরা করেই আলিপুরদুয়ারে নাশকতার ছক জানতে পেরেছে। আলিপুরদুয়ারে ওই জঙ্গি গোষ্ঠীর উপস্থিতি সম্পর্কে গোয়েন্দাদের হাতে প্রমাণ এসেছে। তখনই সক্রিয় হয়েছে এনআইএ। তদন্তে নেমেছে বাংলার এসটিএফ। সতর্ক করা হয়েছে জেলা পুলিশকেও।
অসম সীমানা এবং ভুটানের আন্তর্জাতিক সীমান্তে রয়েছে আলিপুরদুয়ার। তাই জঙ্গিরা এই জেলাকে কেন্দ্রস্থল করে অন্যান্য জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। যাতে সহজেই সীমানা পার করে অন্যত্র ঢুকে পড়া যায়। তাছাড়া অসম থেকে বাংলাদেশে যাওয়াও সহজ। কারণ দুই দেশের সীমানা রয়েছে। তাই এই জেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটসাঁট রাখতে বলেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অফিসাররা। সেই নির্দেশ পেয়েই জেলার বিদ্যুৎ দফতরের সাবস্টেশনগুলিতে সতর্ক দৃষ্টি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই সব সাবস্টেশনে নাশকতা ঘটালে জেলা অন্ধকারে ডুবে যাবে। তাতে আরও বড় কোনও ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটিয়েই বড় নাশকতায় সুবিধে হয় বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।