দেউচা, পাঁচামি কয়লাখনি নিয়ে একসময় বিতর্ক ছিল তুঙ্গে। গ্রামবাসী এবং জমিদাতারা এ নিয়ে আন্দোলনও করেছিলেন। তবে আপাতত তা থেকে তাঁরা পিছু হটেছেন। সরকার ঘোষণা করেছিল, জমিদাতাদের নির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ এবং একটি করে চাকরি দেওয়া হবে। সেইমতো সমীক্ষার কাজ চলছে। সেখানে সেই সমীক্ষার তথ্যে যাতে গরমিল বা দুর্নীতি না হয়, সেজন্য সমস্ত নথি এবং তথ্য ডিজিটাসলাইজেশন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর জন্য একটি অ্যাপ তৈরি করেছে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগম। অত্যাধুনিক সফটওয়্যারের সাহায্যে এই অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। এই অ্যাপে কোন জমির মালিক কত পরিমাণ জমি দিতে ইচ্ছুক? জমিদাতারা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে কিনা? পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়া হচ্ছে কিনা? সেই সমস্ত কিছু তথ্য এই অ্যাপে রাখা হবে। অ্যাপটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘অনুবীক্ষণ’।
প্রসঙ্গত, প্রায় ৩৪০০ একর জুড়ে অবস্থিত এই কয়লা খনি। রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানিয়েছেন, এই কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলন এবং সেই কয়লা বিদ্যুতের কাছে ব্যবহার করতে আর কোনও সমস্যা থাকছে না। কারণ মোট ৪,৮৩৮ টি পরিবারের মধ্যে ৪,৩২৮ টি পরিবার জমি দিতে রাজি হয়েছে। ইতিমধ্যেই তাঁরা সই করেছেন। রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সমীক্ষার পরেও বিভিন্ন তথ্য কারচুপির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। যাঁরা জমি দিতে ইচ্ছুক তাঁদের কাগজপত্র, আবেদন পত্র, জমির তথ্য, জমির দাম, পুনর্বাসন, চাকরি প্রভৃতি তথ্য এই অ্যাপে লিপিবদ্ধ করা হবে। এরকম হলে কারচুপি হওয়ার সম্ভাবনা কম হবে। এই অ্যাপে কয়লাখনি এলাকার সীমানা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে অর্থাৎ কয়লাখনি এলাকার বাইরে জমির তথ্য সংগ্রহ করলে তা বোঝা যাবে। যে তথ্য সংগ্রহ করা হবে তার জিও ট্যাগিং থাকবে। অ্যাপের মাধ্যমে নথিভুক্ত হবে স্থান, জমিদাতারা বাড়ি পাকা না কাঁচা, কত তলা বাড়ি, কতগুলি ঘর রয়েছে, মাটি না কংক্রিটের, রান্নাঘর রয়েছে কিনা বা কী ধরনের রান্নাঘর, বাড়িতে কতগুলি গাছ রয়েছে? সেই সমস্ত তথ্য এই সফটওয়্যারে মজুত থাকবে। ইতিমধ্যেই জেলা শাসকের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি টেকনিক্যাল দল তৈরি করা হয়েছে। এই দল সমস্ত কিছুর তথ্যের ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণের মাপকাঠি ঠিক করা হবে। এর ফলে দুর্নীতি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অন্যদিকে, রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর অন্য একটি সফটওয়্যার তৈরি করেছে, যে সফটওয়্যারে কত বিদ্যুৎ কোন কোন ইউনিটে উৎপাদন হচ্ছে, তার জন্য কত টাকা লাগছে, কত সময় ধরে কাজ হচ্ছে, কোথায় কত বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে? তার জন্য একটি অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বণ্টন নিগম অফিসের ইঞ্জিনিয়াররা এই অ্যাপের মাধ্যমে নজরদারি চালাবেন। এই অ্যাপের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অণুবীক্ষণ’।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup