গঙ্গাসাগর থেকে কপিল মুনি আশ্রম কর্তৃপক্ষের কাছে বিশেষ আর্জি জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্প উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী আর্জি জানান যে গঙ্গাসাগরে কপিল মুনি আশ্রমের পাশের যে অংশটা আসে, সেটা যদি আশ্রম কর্তৃপক্ষ নিজেদের টাকা দিয়ে কংক্রিটের করে নেয়, তাহলে ভালো হয়। রাজ্য সরকার বাকি সব কাজ করছে। কপিল মুনি আশ্রম কর্তৃপক্ষ যে অর্থ পায়, তার কিছুটা খরচ করে শুধুমাত্র ওই অংশটা যাতে কংক্রিটের করে নেয়, সেই আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, কপিল মুনি আশ্রম কর্তৃপক্ষ যে অর্থ পায়, সেটার পুরোটাই অযোধ্যায় চলে যায়।
‘আপনাদের সমস্ত টাকাই অযোধ্যায় চলে যায়’
তিনি বলেন, ‘কপিল মুনির আশ্রমের কাছে আমরা যে প্রস্তাবটা রেখেছিলাম, যে আপনাদের তো প্রচুর দান-ধ্যান করেন মানুষ। আর আপনাদের সমস্ত টাকাটাই বাংলায় আসে না। এই টাকাটা চলে যায় অযোধ্যায়। প্রচুর টাকা। তার থেকে একটা অংশ এক বছরের জন্য আপনারা যদি....কপিল মুনির আশ্রমটা তিনবার ডুবে গিয়েছে। তিনবার নতুন করে করা হয়েছে। আপনারা যদি কপিল মুনি আশ্রমের পাশে ওই জায়গাটা কংক্রিট করে দেন আপনাদের টাকা দিয়ে…..।’
‘আপনাদের হাজার-হাজার কোটি টাকা এখান থেকে চলে যায়’
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা তো সবটাই করে দিয়েছি। আর আপনাদের হাজার-হাজার কোটি টাকা এখান থেকে চলে যায়। পুণ্যার্থীরা এখানে আসেন। আপনাদের দেন। এটা তাঁদের নিজস্ব ব্যাপার। অনেকে দান-ধ্যানও করেন। কাজেই তার থেকে একটা অংশ (দিয়ে) এ বছরের জন্য তাঁরা যদি পরিকল্পনা করে কংক্রিটের করে দেন, (তাহলে ভালো হয়)। বাকিটা তো আমরা করছি।’
আরও পড়ুন: ‘দু’টি পৃথক মহকুমা তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে’, গঙ্গাসাগর থেকে বড় ঘোষণা করলেন মমতা
কপিল মুনি আশ্রম নিয়ে উদ্বেগে রাজ্য
এমনিতে সাগরে যেখানে কপিল মুনি আশ্রম অবস্থিত, তা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায়। ঘূর্ণিঝড় বা ভরা কোটালের সময় বিপদের আশঙ্কা থাকে। লাগাতার ক্ষয়ের কারণে আশ্রম থেকে উপকূলের দূরত্ব ক্রমশ কমছে। সাময়িকভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও কোনও কাজের কাজ হয়নি। গত বছরও রাজ্য সরকারের তরফে যে কাজ করা হয়েছিল, তা প্রকৃতির সঙ্গে লড়াইয়ে টিকতে পারেনি।
আরও পড়ুন: ‘আমরাও গঙ্গাসাগরকে জাতীয় মেলা করব’, বাস–অ্যাম্বুল্যান্স একগুচ্ছ ঘোষণা মমতার
সেই বিষয়টি নিয়ে আগেই একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কীভাবে স্থায়ীভাবে সেই বিপদ এড়ানো যায়, তা খতিয়ে দেখছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সূত্রের খবর, আইআইটি মাদ্রাসের সুপারিশের ভিত্তিতে ২৬৭ কোটি টাকায় বিস্তারিত রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করেছে। যদিও রাজ্যের দাবি, সেই বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও আর্থিক সহযোগিতা মেলে না। তাই নিজেরাই অর্থের সংস্থান করে রাজ্য দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের চেষ্টা করছে বলে সূত্রের খবর।