গর্ভপাত করানো নাকি তাঁর বাম হাতের কাজ। ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বাকেও তিনি অনায়াসেই গর্ভপাত করিয়েছেন। হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে এমনই প্রতিশ্রুতি পেয়ে গর্ভপাত করাতে গিয়েই ঘটল বড় বিপদ। প্রাণ হারালেন এক অন্তঃসত্ত্বা। চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ উঠতেই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। হাতুড়ে চিকিৎসককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার সন্ধিপুর বাজারে এই অভিযোগ উঠেছে। মৃত গৃহবধূর নাম রূপালি কাহার (২১)। অভিযুক্ত চিকিৎসকের নাম আশরাফ আলি। এই ঘটনায় হাতুড়ে চিকিৎসককে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে খবর, তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন রুপালি। তার একটি সন্তানও রয়েছে। তার বয়স এক বছরেরও কম। সেই কারণে তার পরিবার এখনই দ্বিতীয় সন্তান নিতে প্রস্তুত ছিলেন না। গৃহবধূর বাবার বাড়ি বাদুড়িয়া থানার গোকরা গ্রামে। তার শ্বশুরবাড়ি রয়েছে হাড়োয়াতে। পরিবারের চাপে অন্তঃসত্ত্বা ওই গৃহবধূ গর্ভপাত করানোর জন্য পরিচিতদের মাধ্যমে ওই হাতুড়ে চিকিৎসকের কথা জানতে পারেন। এরপর গর্ভপাত করানোর জন্য ওই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয় গৃহবধূ এবং তার পরিবার।
রবিবার গর্ভপাত করানোর সময় মৃত্যু হয় ওই অন্তঃসত্ত্বার। মৃতার মা সরস্বতী মন্ডলের অভিযোগ, ‘চিকিৎসক আমাদের জানিয়েছিলেন গর্ভপাত করানো তার বাঁ হাতের কাজ। ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বারও তিনি গর্ভপাত করিয়েছেন। সে কথা শুনে আমরা এখানে গর্ভপাত করাতে রাজি হয়েছিলাম।’ এই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, বেআইনিভাবে গর্ভপাত করিয়ে থাকেন ওই চিকিৎসক। কিন্তু সে বিষয়ে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে কোনও নজরদারি করা হচ্ছে না। পরিবারের অভিযোগ ভুল চিকিৎসার ফলে মৃত্যু হয়েছে রুপালির। ঘটনার পরেই চিকিৎসককে ঘিরে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দেগঙ্গা থানার পুলিশ। অভিযুক্ত চিকিৎসককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ।