এক মহিলাকে ২৭ বছর ধরে আটকে রেখে লাগাতার ধর্ষণের অভিযোগ উঠল নদিয়ার চাকদহের এক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। বর্তমানে ৫১ বছর বয়সি ওই মহিলার অভিযোগ, ১৪ বছর বয়সে তাঁকে স্কুলে যাওয়ার পথে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর ব্যবসায়ীর বাড়িতেই আটকে রাখা হয় তাঁকে। বছরের পর বছর লাগাতার ধর্ষণ চলতে থাকে তাঁর ওপর। মুখ খুললে নির্যাতিতার পরিবারকে শেষ করে দেওয়ার হুমকি দিত ওই ব্যবসায়ী। সম্প্রতি ব্যবসায়ীর কবল থেকে পালিয়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নেওয়ার পর পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন ওই মহিলা। তারপরেও চাকদহ থানার পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় রানাঘাট জেলা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন ওই মহিলা।
মহিলার অভিযোগ, যখন তাঁকে অপহরণ করা হয় তখন তিনি নবম শ্রেণিতে পড়তেন। অভিযোগ, চাকদহের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী চন্দন দাস ভয় দেখিয়ে তাঁকে আটকে রাখেন। পিস্তল দেখিয়ে ওই নাবালিকাকে বিয়ে করে ওই ব্যবসায়ী। ধর্ষণের ফলে বারবার গর্ভবতী হওয়ায় জোর করে প্রায় দশ বার গর্ভপাত করানো হয় তাঁর। কাউকে কিছু বললে মহিলার বাবা মাকে খুন করে দেওয়া হবে বলেও ভয় দেখানো হয়। কয়েকশো কোটি টাকার মালিক এবং রাজনৈতিক যোগ থাকায় ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি কেউ। এমনকি বেশ কয়েকবার তাঁর বিরুদ্ধে খুন ও ধর্ষণের অভিযোগ উঠলেও সেটা টাকার বিনিময়ে পুলিশ ধামাচাপা দিয়েছে বলে নির্যাতিত পুলিশ সুপারকে জানিয়েছেন। চাকদহ থানার সব ইন্সপেক্টর সুন্দর গোপাল রায়ের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।
এই ঘটনায় রানাঘাট জেলার পুলিশ সুপার অভিজিৎ ব্যানার্জির নির্দেশে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে চাকদহ থানার পুলিশ। তবে কাউকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। সম্পূর্ণ অভিযোগের তদন্ত ভার দেওয়া হয়েছে এসডিপিও কল্যাণী তারকশঙ্কর ভট্টাচার্যকে। অভিযোগকারী জানাচ্ছেন, ‘পুলিশ কেন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করছে না সেটাই বুঝতে পারছি না। বছরের পর বছর কতটা নৃশংস যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে সেটা আমি জানি। আমার জীবনটাই শেষ। এখন আমার দেওয়ালে পিঠ থেকে গিয়েছে বলে অভিযোগ করতে বাধ্য হলাম।’