অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রান্নাঘর ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠল গ্রামের এক প্রভাবশালী পরিবারের বিরুদ্ধে। রান্না ঘর না থাকায় টানা দুদিন ধরে রান্না হচ্ছে না। ফলে পুষ্টিকর খাবার না পাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন প্রসূতি এবং শিশুরা। শনিবারও রান্না না হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীদের একাংশ। তাঁরা এই ভাঙচুরের ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানান। এই দাবিতে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা।
শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের চাঁচল-১ নং ব্লকের অলিহোন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের মহব্বতপুর গ্রামে। টানা এক ঘণ্টা ধরে চলে বিক্ষোভ। তাতে সামিল হন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য। এদিকে, রান্না না হওয়ায় খাবারের বদলে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে শিশু ও মায়েদের। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রশসনকে জানানোর পরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতের অন্ধকারে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রান্নাঘর ভেঙে বাঁশ ও টিন ফেলে দেওয়া হয়। ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে মহিদুল ইসলামের পরিবারের বিরুদ্ধে। গ্রামবাসীরা বাধা দিলে মহিদুলের স্ত্রী নুরবানু বেগম নামে এক মহিলা ও তার দুই মেয়ে হাঁসুয়া, দা নিয়ে গ্রামাসীদের দিকে তেড়ে আসে বলে অভিযোগ। নুরবানু বেগমের দাবি, যে জায়গায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রান্নাঘর নির্মাণ করা হয়েছিল সেটি তাদের বাড়ির মূল ফটকের জায়গা। যদিও গ্রামবাসীদের দাবি, ওই জায়গাটি হল সরকারি জায়গা। এদিন নুরবানু বেগম সহ তার দুই মেয়ে আসমা ও রেশমা রান্নঘর ভেঙে গুড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ। সেই ভিডিয়ো সামাজিক ভাইরাল হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
সরকারি জায়গায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রান্নাঘর ভাঙচুরের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন গ্রামবাসীরা। গ্রামের এক বাসিন্দা মাবুদ আলমের অভিযোগ, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রান্নাঘর রাখতে দিতে চায় না মহিদুল ইসলামের পরিবার। গতকাল সন্ধ্যায় মহিদুলের স্ত্রী নুরবানু বেগম ও তার দুই মেয়ে রান্নাঘরে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। তারা বাঁশ ও টিন খুলে বাগানে ফেলে দেয়।
এমনকী শনিবার সকালে অঙ্গনওয়াড়িকর্মী রান্না করতে এলে তাঁকেও হাঁসুয়া দেখিয়ে শাসানো হয় বলে অভিযোগ। শিশুদেরও ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। মহব্বতপুর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী চন্দনা দাস বলেন, ‘মহব্বতপুর উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশে সরকারি জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রান্না ঘর। কিন্তু এলাকার প্রতিবেশী মহিদুর ইসলাম সেই রান্নাঘরটি ভেঙে ফেলেন। রান্না ঘর না থাকায় শিশু ও প্রসূতিরা দুই দিন ধরে পুষ্টিকর খাবার পাচ্ছে না। আমি রান্না করতে গেলে আমাকে মারতে আসছে ওরা।’
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুদ্ধ স্থানীয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য। পঞ্চায়েত সদস্য জামালুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে পুলিশকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ না করে ঘটনাস্থল ঘুরে চলে যায়। আমরা চাই এর সুষ্ঠু সমাধান হোক।’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে ওই পরিবার।
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup