সম্প্রতি পড়ুয়াদের ট্যাব কেলেঙ্কারিকে কেন্দ্র করে তোলপাড় হয়ে উঠেছিল রাজ্য রাজনীতি। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ছাত্রীদের অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে গেল কন্যাশ্রীর টাকা। এমনই অভিযোগ উঠেছে স্কুলের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি মালদার মানিকচক থানার এনায়েতপুর হাই স্কুলের। বিষয়টির সামনে আসতেই থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষক। এমন ঘটনাকে কেন্দ্র শোরগোল পড়ে গিয়েছে মালদায়।
আরও পড়ুন: কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর প্রশংসায় UNICEF!সামাজিক উন্নয়নে প্রভাব নিয়ে দরাজ সার্টিফিকেট
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সবমিলিয়ে ১৪ জন ছাত্রী কন্যাশ্রী ২ ( কে ২)- এর টাকা পায়নি। সবগুলি চলে গিয়েছে অন্য অ্যাকাউন্টে। আর তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল সব টাকা ঢুকেছে ধরমপুরের বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে। তাতেই বেনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন প্রধান শিক্ষক বাদিউজজামান। তিনি জানান, এর আগে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন সুনন্দ মজুমদার। তাঁর সময়েই এই বেনিয়ম হয়েছে বলে দাবি প্রধান শিক্ষকের।
বাদিউজজামান বলেন, তিনি এই স্কুলে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন ২০১৯ সালের শেষের দিকে। তবে করোনা পরিস্থিতি এবং টালবাহানার জেরে শেষ পর্যন্ত ২০২২ সালে তিনি স্কুলের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এরপর ওই বছরের শেষের দিকে ব্লকের সঙ্গে যোগাযোগ করে কন্যাশ্রীর আইডি, পাসওয়ার্ড নিজের নামে করে নেন। তখন তিনি অভিযোগ পান, অনেক ছাত্রীর ফর্ম ফিলাপ হয়নি। সেটা নিয়ে খোঁজখবর করতে গিয়েই তিনি জানতে পারেন অনেক কন্যাশ্রী ২- এর টাকা ২০২১ সালে উঠে গিয়েছে। তবে ছাত্রীরা জানায়, তারা টাকা পায়নি। এরপর প্রধান শিক্ষক খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন, যে টাকা ঢুকেছে সেগুলি ধরমপুরের ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। তখনই গরমিলের বিষয়টি তাঁর নজরে আসে। এই ঘটনায় সমস্ত তথ্য সহ ছাত্রীদের নিয়ে থানার দ্বারস্থ হন প্রধান শিক্ষক।
ঘটনায় স্কুলের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক। এ প্রসঙ্গে বাদিউজজামান বলেন, যে কে ২- এর ফর্ম ফিলাপ হয়েছিল তাতে সই করেছিলেন তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং সহকারি প্রধান শিক্ষকের লোগো ব্যবহার করা হয়েছিল ফর্মগুলিতে। তাঁর বক্তব্য, এভাবে সহকারি প্রধান শিক্ষকের সিল ব্যবহার করা যায় না, এটি বেআইনি। এই ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পাশাপাশি দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক এবং মেয়েদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, কে ১- এ আবেদনের পাঁচ বছর কে ২- এর জন্য আবেদন জানানো যায়। কিন্তু, এক্ষেত্রে ২০১৮ সালের পর ২০২১ সালে কে ২- এর টাকা তোলা হয়েছে। সুতরাং এতে জালিয়াতি হয়েছে সেটা স্পষ্ট।